শুক্রবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

দূরত্বের নির্জনতায়

 


   ।। চন্দ্রিমা দত্ত ।।

 

সবকিছুর সাথে দূরত্ব বেড়ে গেলে

বুঝি, কোনও এক ঝড়োরাত্রি আসন্ন-

মনে হয়  যে ক্ষত শুশ্রুষাযোগ্য  নয়

তারজন্য  অকারণ চিন্তা কেন?

সবার জন্য আরোগ্যনিকেতন নয়

আনন্দনিকেতনও নয় ...

 

দূরত্ব এক আগুনরেখা, ঝলসে যায় পা,

দূরত্ব এক উদাস-আখড়ার ক্লান্ত সুরে

বৈষ্ণবীর  বিষাদ-যাপন কথা ...

যা চলে যায় যেতে দিতেই হয়

যে থাকবে না সে যাবেই সুদূর

আদর্শ, স্বপ্ন, বিপ্লবী ও বিপ্লবের উত্থান

সব-ই একদিন অর্ধসমাপ্ত গল্পে থেকে যায়,

হারিয়ে যায়, 'স্মৃতিঘর' পরে রয় একা নির্জনে ...

 

দূরত্বে ও নির্জনে  রচিত হয় যে বন্ধুত্ব

অন্তহীন প্রবাহে মায়া-জীবনে এটুকুই সত্য –

বিবর্ণ

 


।। মৃদুলা ভট্টাচার্য ।।

 

সৃষ্টির তুলিতে যে গভীরতা রয়েছে

বোধের সচেতন অঙ্কুরিত বীজ

তা কজন জানে! ছড়ানো জনজীবনে

রহস্যের মায়াজাল বোনা হচ্ছে

অন্তরালে ব্যাপক বিশালতা

প্রতিনিয়ত আবদ্ধ মানবিক বোধ!

বিদ্বেষ আর হিংসার সাম্প্রদায়িক ভূমিতে

ওইসব বীজের অঙ্কুর মুষড়ে অজানা

এক অমোঘ ছায়ায় সমাজ নামক শরীরে

লেপন করা হয় কর্দমাক্ত বিবর্ণ রঙ

অজানা আতঙ্ক আশঙ্কায় টুটিটিপে

ভালবাসার সবুজ হৃদয়।


পতাকার রঙ

 


।। শ্রীমান দাস ।।

 

উড়ালপুলের তলা যার ঘর

ফুটপাত যার উঠোন,

তার কাছে তো বহুকাল আগেই

ফিকে হয়ে গেছে পতাকার রঙ।

 

তার অর্ধাহারী পেট জানে

দুটো পোড়া রুটির জন্যেও

কতটুকু স্বাধীনতা বিক্রি করেছে সে।

 

তার কাছে অর্থহীন যত প্রতিশ্রুতি

ইশতেহার কিংবা ভিশন ডকুমেন্ট,

অমৃত মহোৎসব - সে তো বড্ড তেতো!

 

কতো রঙের পতাকার বাতাস লেগেছে গায়,

শুকায়নি তবু বঞ্চিত শরীরের ঘাম

দেয়নি কেউ দুমুঠো ভাতের নিশ্চয়তা।


কেন এসেছো!?

 


।। পিঙ্কী দাস ।।

ওহে ঊনিশ কেন এসেছ তুমি?

লাল টগবগে সব ফুল নিয়ে।

ওহে ঊনিশ কেন এসেছ তুমি?

এত আনন্দ উত্তেজনা নিয়ে

শহীদের মায়ের বুকে আঘাত দিতে?

উত্তর দাও! আমায় উত্তর দাও!

 

উত্তরে "ঊনিশ" বলে উঠে-

ওহে শহীদের মাতা

আমি এসেছি কেন জানো?

তোমার বুকে ১৯৬১-র আঘাত দিতে নয়

আমি এসেছি

১৯ শে‌ মে আর লাল ফুল নিয়ে

ভাষার সে শহীদদের বরণ করতে

জমি

 


।। নীলাদ্রি ভট্টাচার্য ।।

 

মেঘ নিয়ে ওঠার পথে

সমাহিত বৃষ্টি প্রবেশ

সুদীর্ঘকাল থামাতে পারেনি

ফলনের আগুন

 

ভেসে আসে মনের এলাকায়

দেহ ছাড়া

জলের একাত্ম কথা

 

লিপিবদ্ধ

 

ভয়শূন্য 

 

পরিপাটি

 

আমানত

সংযমের আপন চুম্বন।

শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৩

প্রতাপ এর কথা



।। মঞ্জরী হীরামণি রায় ।।

শৈলেন দাস বরাক উপত্যকার সাহিত্য চর্চায় এক পরিচিত নাম। শৈলেনের কবিতা আমি প্রথম ওঁর কন্ঠেই পাঠ শুনেছিলাম শনবিলে একটি অনুষ্ঠানে। সেদিন আমার সাথে ছিলেন আরও এক তরুণ কবি  মৌপিয়া চৌধুরী।  আমরা দুজনেই মুগ্ধ হয়েছিলাম একটাই কারণে, কারণ  শৈলেনের কলম শিকড়কে আঁকড়ে ছিল। দীর্ঘ দিন ধরে শহরে পড়াশোনা এবং বসবাস শৈলেনের, কিন্তু তিনি শিকড়কে ভুলে যাননি। তাই তো তিনি লিখতে পারেন ---

" হাওর জলাভূমি চাষবাস
নদী ঝিল বিল এবং মাছ
এসবই আমার লিগ্যাসী এখন
এমনটাই সবার ধারণা এবং বিশ্বাস।
তবে জেনে রাখা ভালো এবং প্রয়োজন
সামাজিক ন্যায়, সুশাসন সংস্থাপনে
অন্ত্যজ শ্রেণীর একটি বিদ্রোহই
আমার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। "

আর ঠিক এ কারণেই তিনি পত্রিকা করছেন।  'প্রতাপ' শৈলেনের ঐকান্তিক চেষ্টায় সত্যিকার অর্থেই একটি অবহেলিত জনগোষ্ঠীর "সমাজ ও সাহিত্যের প্রতিভাস"। তা বলে কী প্রতিষ্ঠিত লেখকরা লিখছেন না?  অবশ্যই লিখছেন। এ উপত্যকার যাঁরা বিশিষ্ট, যাঁরা উত্তর পূর্বাঞ্চলের সীমানা অতিক্রম করেছেন সাহিত্য কৃতিতে তাঁরাও কিন্তু 'প্রতাপ' -য়ে লিখছেন। আর এটাই আমাদের বরাক উপত্যকার সৌহার্দ্য, পাশে থাকার স্পর্ধা।

#৯ম_উত্তর_পূর্বাঞ্চলীয়_বাংলা_ছোট_পত্রিকা_সম্মেলন --য়ে  যে সংখ্যাটি উন্মোচিত হলো, সেটি 'প্রতাপ' এর চতুর্দশ প্রকাশ। ২০১২ থেকে পত্রিকাটি শৈলেন অনিয়মিতভাবে বের করে যাচ্ছেন। এবারের সংখ্যাটি সাজিয়েছেন  কবিতায়  কবিতায়। এ'তে লিখেছেন রানা চক্রবর্তী, সুজিৎ দাস, দোলনচাঁপা দাস পাল, সুশান্ত ভট্টাচার্য,  স্মৃতি দাস, বিশ্বরাজ ভট্টাচার্য,  শতদল আচার্য, নীলাদ্রী ভট্টাচার্য, মঞ্জরী হীরামণি, শৈলেন দাস, দেবলীনা রায়, আব্দুল হালিম বড়ভুঁইয়া, কুসুম কলিতা, সুখেন দাস, আনুয়ারুল হক, সুশীল দাস, সজল দাস, চন্দন ঘোষ, বিষ্ণুপদ দাস, পিংকি দাস, মানসী সিনহা, সুচরিতা দাস, ধ্রুবজ্যোতি মজুমদার, দেবরাজ শুভ, সুরজ কুমার নাথ,  জয়মনি দাস। 

প্রতিষ্ঠিত কবিদের সাথে এখানে একেবারেই নূতনরা লিখেছেন। লিখেছেন পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর প্রতিভাবান  ছেলে-মেয়েরা। সম্পাদকের সামান্য কথাও রয়েছে। ছোট্ট করে  প্রচ্ছদও রয়েছে ৮ পাতার এই অণু পত্রিকাটিতে। 

এগিয়ে যাও শৈলেন ; এগিয়ে নিয়ে চলো প্রান্তিক জনদের।  অফুরান শুভেচ্ছা সহ পাশে আছি।

সোমবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২৩

প্রতাপ- এর গান ভাসে হিজলের ছায়ায়



।। শর্মিলা দত্ত ।। 
‘প্রতাপ’ এগিয়ে চলেছে ........
এবং বহুদূর তার যাত্রা --- এ আমাদের একান্ত বিশ্বাসের উচ্চারণ।

‘একটি ভাটিয়ালি গান থেকে আমার জন্ম
বহু যুগ আগে, পদ্মানদীর বুকে, আমার এক পূর্বপুরুষ—
এক কৈবর্ত পুরুষ- এক বলিষ্ঠ ও উদাসীন ইলিশ-শিকারী মাঝি
শেষ রাতে, টিপ টিপ বৃষ্টির ভিতরে,
প্রবল ঘুর্ণিময় নদীজলে শক্ত হাতে বৈঠা টেনে টেনে
একটি ভাটিয়ালি গান গেয়েছিলেন—

সেই গান থেকে আমার জন্ম
আমার পিতৃ-পিতামহের
মাতৃ-মাতামহের জন্ম .....' (আত্মপরিচয়, রনজিৎ দাশ)
এমনই মানব জন্মের মানবতার বহুধা কথা নিয়ে ‘প্রতাপ’- এর চলমান সাহিত্যজীবন। সম্পাদক দৃপ্তকণ্ঠে আমাদের জানিয়েছেন, ‘শহরকেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চার আসরের সাথে গ্রাম-বরাকের যোগসূত্র গড়ে তোলাই ‘প্রতাপ’-এর উদ্দেশ্য'।— এমন কথা বহু পত্রিকার সম্পাদকীয়তে প্রথমে উচ্চারিত হতে দেখা যায় কিন্তু পরে— এবং ক্রমশ তা অপসৃয়মান কিন্তু অবশ্যই ব্যতিক্রম ‘প্রতাপ’। প্রতাপ এর পাতা জুড়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ জলজ অঞ্চল - শনবিল, চাতলা হাওরের অজস্র কথকতা। তরুণ প্রজন্মের এমন লেখার প্রবণতাকে আন্তরিকভাবে কুর্নিশ করি। স্যালুট জানাই সম্পাদককে যিনি প্রতিনিয়ত উৎসাহ এবং তাগাদা দিয়ে ভালবেসে লিখিয়ে নেন তাদের কলমে বহু সুখ-কথা কিংবা দুঃখগাথা, বঞ্চনার স্বরলিপি অথবা হিজলের ছায়ায় নদীর সাথে ঘাটের সখ্যতার কথা। এ-সবই রয়েছে ‘প্রতাপ’-এর পাতা জুড়ে।

গ্রাম-রাকের ছোট দুধপাতিল, শ্রীকোনার সাহারজুম, দ্বিগরশ্রীকোনা, বিস্তীর্ন চাতলার শ্যামপুর, হরিনগর, রাজপুর, বাঘমারা, রতনপুর এলাকার লেখকরা লিখে চলেছেন তাঁদের অনুভব ও ভাবনার কথা। তাঁদের এই লিখে যাওয়াই-অমাদের কাছে আগামীর প্রত্যয়। সময়, কাল তাঁদেরকে যে যার মতো করে তুলে ধরবে অবশ্যই।
সম্পাদক ‘প্রতাপ’ – এর মাধ্যমে বারবার অনুরোধ রেখেছেন নবপ্রজন্ম যেন নিজেদের এলাকার সমৃদ্ধ ভাবনাকে, লেখনীতে তুলে ধরেন। ‘গ্রাম-বরাকের নতুন প্রজন্ম ‘প্রতাপ’ কে নিজেদের প্রতিভা প্রকাশ করার প্রাথমিক মাধ্যম হিসাবে গ্রহন করলেই স্বকীয়তা বজায় থাকবে পত্রিকাটির, সার্থক হবে পত্রিকা গোষ্ঠীর নিরলস প্রয়াসের'- সম্পদকের এ উচ্চারণ অসাধারণ! ‘প্রতাপ’- এর অন্তরনামাই এই কথাকে সমর্থন করে। দু'একজন খ্যাত নামা লেখক ছাড়া বাকি সবাই প্রায় তরুন প্রজন্মের এ বিষয়টাই আমায় মুগ্ধ করেছে, ‘প্রতাপ’কে প্রশ্রয় দিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। পত্রিকার মান রাখার তাড়নায় নিজের উচ্চারনের ক্ষতি করেননি সম্পাদক। মানের পরিধি, উচ্চতা – এসব বিষয়ে শেষ কথা বলার আমরা কেউ নেই। কাল-মহাকাল ঠিক চিনিয়ে দেবে আমাদের কে কোথায় আছি বা থাকবো। মাটির গল্প নিয়ে জলজ বাতাসে হিজলের ছায়ায় ‘প্রতাপ’-এর উড়ান হোক অনন্ত অসীম।

মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২

নাগরিকত্ব




।। ধ্রুবজ্যোতি মজুমদার।।

এই যে আমি আছি
রক্ত-মাংস-হাড়ে গড়া
জলজ্যান্ত তোমার সামনে
অখন্ড সত্য আমার অস্তিত্ব?!
কোন কোণ থেকে কি
আমাকে মনে হয় ভিনগ্রহী?
ভিন্নত্বটা ঠিক কোথায় বলো?
জন্মগত আমার নাগরিকত্ব।।
আমি জন্মসূত্রে নাগরিক এই পৃথিবীর
পুরো অধিকার বায়ু-মাটি-জলে,
তোমরা কে হও
দাগ কেটে ছিনে নেওয়ার
ঈশ্বর প্রদত্ত সত্ত্ব?!!
বুড়ো খোকার দল-
তোমাদের মানচিত্রে আমার আগ্রহ নেই
শুধু জেনে রাখো-
প্রাণী মাত্রেই বসুধার বাসী
এর বেশী জানতে চাই না-
কোন ভারী ভারী স্বার্থান্ধ কুট তত্ত্ব।।

রবিবার, ২৯ মে, ২০২২

মরুভূমি শ্মশান



[প্রতাপ, পঞ্চম সংখ্যা]

।।প্রসেনজিৎ দাস।।

আজ মাথা ঘুরে কান্ড দেখে
আকাশ ছুঁয়ে গেছে আগুনে
সন্ত্রাসের ত্রাসে আলোড়ন জাগে
সমস্ত বিশ্ব ভুবন জুড়ে।
ভয়ে পরাণ কাঁপে থরথর
যেভাবে মানুষ হারাচ্ছে হুশ
একদিন পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে
হিংসার আগুনে পুড়ে কালাহারি
মরুভূমি অথবা মণিকাঞ্চনের মত
শ্মশানের রূপটা পড়ে থাকবে শুধু
মাটির 'পরে নিরব আর চুপ।

শুক্রবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

শতদল আচার্য-র দুটি কবিতা



।।'প্রতাপ' পূজা সংখ্যা ১৪২৫।।

দেশ নেই---শুধু গল্পই থেকে যায়।

আমাদের কোন দেশ নেই
কেবল গল্প আছে।
তেমন কোন ঘর ও নেই
শীত তাপ নিয়ন্তিত আরামপ্রিয় বিছানা
যেখানে নাড়িয়ে জানাবো শরীরের সব ভাষা।

ছোটবেলা থেকে শুনে আসা এক দেশের গল্প
গল্পে ভাসমান মাছ  ভাতে ভাল থাকার গান।

এই যে সব শেষ হয়ে আসার  পরও গল্প থেকে যায়
এখন দেখি গল্পের দেশের মত
আমাদের এক গল্প এসেছে জীবনে
আমাদের কোন দেশ নেই
শুধু গল্পই থেকে যায়।

...

স্মৃতি

দরজাটা খুলতেই দেখি
দাঁড়িয়ে আছে স্মৃতি।

একটা সময় দ্রুত  দৌড়ে গেল
সমস্ত  ওয়েব ল্যাংথ জুড়ে
               একটা ছন্দপতন ।আর
ভেসে এলো,
                   বিলায়েত খানের
                      সেতারের শব্দ।

রাকেশ দাস এর দুটি কবিতা



অন্তহীন ভাবনা


চুকিয়ে দিয়ে সকল খেলা
            ধ্রুবতারার দেশে যাব,
মানস লোকে আপন-ভোলা
         শূন্য দোলায় দোল খাব।

ক্লান্ত পথিক শূন্য হাতে
          সসীম খেলায় ক্ষান্ত হব,
পাগল পারায় গতির নেশায়
            অনন্তকাল বিভোর রব।

এবার আমি চুকিয়ে দিয়ে
          ভূবন ঘরের পাওনা দেনা,
তিমির মাখা আলোক লোকে
                   মত্ত হয়ে দেব হানা।

থামব না কোনো আঘাত পথে
                 পূর্ন করব মন-বাসনা,
এ যে আমার  স্বাধীন মনের
               এক অনন্তহীন ভাবনা।

...


আকাশ মাটির যুগলবন্দী


মন পবনের নাও ভাসিয়ে বিশেষ কারো খবর
অসীম গাঙের সসীম তীরে নিয়েছি আজ জবর।

পাইনি খুঁজে অচিন পাখির নাগাল
মন মাঝি তার বৈঠা বেয়ে চলছে চিরকাল।

তোমার আমার খেলার মাঝে-কাজের ফাঁকে
ময়না দ্বীপের অচিন নারী  আমায় ডাকে।

ভাবছি আমি কাজের শেষে সারা বেলা
ভাসিয়ে দেব শ্যামের বাঁশির সুরের ভেলা।

প্রাণের খেলায় মত্ত হয়ে অভিসারে
অসীম পথে পা বাড়াব রাধার মত চুপিসারে।

বৃন্দাবনের পথের ধূলায়-ফুলের দোলায়
কৃষ্ণ-রাধার নবীন বাসর কুসুম মালায়।

ছুটির মাঝেও কাজের ছুটি হয়না আমার কোনোদিন
মনের আকাশ যুগান্তরে আশার দিশায় রঙিন।

নিরুদ্দেশে মাত্রা পথে যাত্রা কবে হবে শুরু
সেই আশাতে বক্ষ আমার করে দুরু  দুরু।

মনের ভিতর অচিন পাখি কখন আসে যায়
পড়লে ধরা হৃদয় শিকল দিব পাখির পায়।

নৃপেন্দ্র দাস এর দুটি কবিতা



চেতনা


হে আমার দরিদ্র শনবিল
হে আমার কাঙ্গাল শনবিল
হে আমার নির্যাতিতা শনবিল
উঠো জাগো নিশী অবসান প্রায়।
চিৎকার করো দুধের শিশুর ন‍্যয়।

মৌন কেন তুমি জননী
মৌন কেন তুমি নির্যাতিতা নারী
মৌন কেন তুমি নব শিশু
মৌন কেন তুমি কিশোর কিশোরী
উঠো জাগো নিশী অবসান প্রায়।
চিৎকার করো দুধের শিশুর ন‍্যয়।

ও আমার জন্মভূমিগো তুমি জাগো
ও আমার শনবিলগো তুমি উঠো
ও আমার চাষা ভাই উঠো জাগো
ও আমার মৎস্যজীবী ভাই উঠো জাগো
উঠো জাগো নিশী অবসান প্রায়।
চিৎকার করো দুধের শিশুর ন‍্যয়।

...


প্রিয় শনবিল


হে সোনার রবি সোনার আলো
সিগ্ধ পরশ তৃষার ভালবাসা।
জাগাও জাগাও হে তুমি
মৌন সমাজের নিদ্রা;
জাগাও নিরাশা মানুষের অন্তরে আশা।

সুপ্রভাতে যেমন শিশির ভেজা আকাশে
সোনালী আলোয় আলোকিত তুমি।
তেমন অসহায় সমাজের অন্ধকার
নিরীহদের জীবনের যত আঁধার
দুরে সরিয়ে দাও নব রবি তুমি।

হে বিচিত্র পৃথিবী সবুজ অরণ্য
তোমার সবুজে শ্যামলে,
ভরিয়ে দাও রাঙিয়ে দাও শনবিল।
তোমরা উঠে এসো হে কৃষক,
তোমরা উঠে এসো হে মৎস্যজীবী
সূর্যের মতো তেজস্ক্রিয় হয়ে
অন্ধকার থেকে এসো বাহির হয়ে।

এই সপ্তাহের জনপ্রিয় পোষ্ট

আকর্ষণীয় পোষ্ট

প্রতাপ : ১৭তম সংখ্যা (পূজা সংখ্যা - ১৪৩১)

প্রচ্ছদ  :  শুভজিৎ   পাল সম্পাদকীয় ......... বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত উৎসব , দুর্গাপূজা। এই সময়টিতে বাঙালির প্রাণের মিলন , সংস্কৃতি আর ঐতিহ...