শিলচর লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
শিলচর লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৪

বসন্তের ভালোলাগা

 


                                        - শৈলেন দাস 

ভরদুপুরে প্রায় দেড় ঘন্টা ড্রাইভ করার পর ব্লকের রাস্তা অতিক্রম করে একটি কালো রংয়ের ফোর'হুইলার এসে থামলো গ্রামের  শেষ প্রান্তে গ্রামটির নাম সন্তোষপুর। ধীর পায়ে গাড়ি থেকে নামল সোহিনী ঘাড় ঘুরিয়ে দুচোখ ভরে দেখল সবদিক তারপর কল করল মোবাইলে।

মাত্র মিনিট সাতেকের হাঁটাপথ, তারপর টিলার উপরে পর্যটন স্থল। জায়গাটির নাম "পাঁচাল"। সেখানে ঘুড়ি উৎসবে যোগ দিতে শিলচর থেকে এসেছে সে। সামাজিক মাধ্যমে এই উৎসবের কথা জেনে আগ্রহ প্রকাশ করতেই সাড়া দিয়েছিল তার ফেসবুক ফ্রেন্ড ধীরেন দাস। সে-ই জানিয়েছিল, এই উৎসব শিশুদের নিয়ে। শিশুরা প্রাণের আনন্দে হই হই রই রই করে রঙ-রঙিলা ঘুড়ি উড়ায় আর বসন্তবাতাস সেই ঘুড়িদের সাথে লাগিয়ে দেয় হুটোপুটি। মেয়েরা আলপনা দেয়, ছোট্ট ছোট্ট মেয়েরা মায়ের, দিদিদের শাড়ি পরে সেজেগুজে আসে নাচবে-গাইবে বলে। বয়সের কোন বাধা নেই, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে গ্রামের সবাই চলে আসে ঘুড়ি উৎসবের আনন্দ-হাটে।

সোহিনীর মনে প্রথমে কিছুটা সঙ্কোচ ছিল। শুধুমাত্র ফেসবুকে পরিচয়ের সুবাদে ধীরেনের ডাকে এখানে তার চলে আসা ঠিক হয়েছে কি? সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্বের ফাঁদ পেতে আজকাল কত রকম অপকর্মই তো চরিতার্থ করছে কিছু লোকে! কিন্তু না, এখানে আসার পর ভীষণ ভাল লাগল তার। ধীরেন সোহিনীকে ঘুরে দেখালো চারপাশ। পাঁচালের পশ্চিম দিকে বিস্তৃত শনবিল। পূর্ব দিকে ছোটকোনা গ্রাম। ধীরেন হাতের ইশারায় দেখিয়ে দিল ফেসবুকে সোহিনীর ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা প্রীতিভাজনব্যক্তি'র বাড়ি। সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় সেখানকার আরও দু একজন বন্ধুর সাথে পরিচিত হল সে। তারপর সবাই মিলে কিছু ছবি তুলল মুঠোফোনে।

সোহিনী দেখল ঘুড়ি উৎসবে যোগ দিতে শিলচর থেকে কবি চন্দ্রিমা দত্তও এসেছেন তার প্রিয়জনদের সাথে। অন্যদের সাথে আলাপচারিতায় ব্যস্ত কবি। সোহিনী কাছ থেকে কবিকে দেখার মনোবাসনা নিয়ে এগিয়ে যেতেই শুনতে পেল কবি বলছেন - 'শনবিলের এই ঘুড়ি উৎসব যেন প্রান্তিক এই এলাকার মানুষের প্রাণের উৎসব। কোনও কৃত্রিম দেখনদারি ব্যপারই নেই। বয়স এখানে কোনও বাঁধা নয়, আনন্দই শেষ কথা। তাছাড়া এই ধরনের ছোট ছোট উৎসবগুলোর আয়োজন বলতে গেলে এক নিভৃত আন্দোলনও বটে। আমার বিশ্বাস, একদিন সরকারের সুনজরে শনবিল আসবে আর শনবিলের গোটা সমাজ উন্নততর জীবনে যাপন করবে তাদের দিন।' সোহিনীরও মনে হল ঠিক তাই। এই উৎসবের আনন্দ আমেজ তার মনকেও ছুঁয়েছে ভীষণভাবে। সে অনুভব করল এই উৎসবের আয়োজক সংস্থার সবাই তো বটেই এখানকার সাধারণ মানুষও খুব আন্তরিক এবং সমাজবন্ধু। তারা অপরিচিত সোহিনীকেও নিজেদের দলে ভিড়িয়ে নিল আপন ভেবে। আর ধীরেনের ব্যবহারে তো সে অভিভূত একেবারে।

দুপুর গড়িয়ে এখন বিকেল। টিলার সবুজ মাঠ দিয়ে হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছে সোহিনী। ধীরেন একদৃষ্টে তাকিয়ে কিছুক্ষণ দেখল তাকে। তারপর ডেকে বলল - 'কেমন লাগল আমাদের গ্রাম, বললে না যে? এখানকার মানুষজন, এই ঘুড়ি উৎসব।' ঘুরে দাঁড়ালো সোহিনী। বেশ কিছুক্ষণ চারপাশে দেখার পর, দুবাহু ছড়ায়ে দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে উচ্চস্বরে বলল- 'আই লভ ইট।' তারপর এগিয়ে এসে লাজুক হেসে ধীরেনের চোখে চোখ রেখে বলল - 'শনবিল আমার খুব প্রিয় এবং এখানকার মানুষজনও।' বলেই চটপট গাড়িতে উঠে পড়ল সে। বসন্তের মধুর ভালোলাগার মুগ্ধতা নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল ধীরেন, চারপাশের বিশাল টিলা আর উঁচু নীচু প্রান্তর জুড়ে কেবল সহজিয়া আনন্দের ঢেউ ...।

বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪

আমি আরো ব্যস্ত হতে চাই

 


।। সুখেন দাস ।।

 

আমি আরো ব্যস্ত হতে চাই!

নিজেকে নিজের মতো করে রাখতে চাই।

আমি চাই না কোনো ভোগ বিলাসী!

দুঃখ হলেও নিজেকে নিজের মতো করে হাসি।

 

আমি আরও ব্যস্ত হতে চাই!

নিজেকে একটু শান্তিতে বাঁচাতে চাই।

আমি চাই না কোনো রূপের রূপবতী!

চাই না কোনো অতল জলের মোতি!

 

আমি আরো ব্যস্ত হতে চাই!

নিজেকে নিজের মতো করে তৈরী করতে চাই।

আমি চাই না কোনো দয়াহীন রাজা হতে!

শুধু মিলেমিশে থাকতে চাই সবার সাথে।

 

আমি আরো ব্যস্ত হতে চাই!

নিজেকে তোমাদের কাছে সমঝে দিতে চাই।

আমি চাই না কখনো নিজের জন্য!

তোমাদের আনন্দ খুশিতেই আমি ধন্য।

 

আমি আরো ব্যস্ত হতে চাই!

 সমাজের হিতে কাজ করে যেতে চাই।

পাড়াপড়শি ভাই বন্ধু, সবার সাথে রাখতে চাই পরিচয়!

সমাজও যেন চিনে; সুখে আমি, শান্তিতে মা, পিতা বিজয়

বুধবার, ৬ মার্চ, ২০২৪

অবস্থান

 


-শর্মিলী দেব কানুনগো

-- বৌদি এই ক্রিমটা আমারেও একটা আনিয়া দিও নমিতার কথায় গা পিততি জ্বলে উঠে বিথির। এই এক সমস্যা হয়েছে এখন। বিথির যা আছে সব নমিতারও চাই। আশ্চর্যনিজের ওজন বুঝে চলতে পারে না মেয়েটা। মুখে অবশ্য নমিতাকে কিছু বলে না সে। না বলার কারণ আছে। নমিতাকে কেন্দ্র করেই সকাল থেকে বিকেল আর বিকেল গড়িয়ে রাত নামে বিথির বাড়িতে। দুই হাতে বিথির সংসার সামলায় নমিতা। একদিন নমিতা কাজ কামাই করলে বিথি চোখে অন্ধকার দেখে।

    রাত আটটায় বিথিদের রাতের খাবার টেবিল সাজিয়ে বাড়ি ফিরে সে। আর ভোর ভোর আবার এসে এ বাড়িতে ঢুকে। নমিতা ছাড়া কি একদিন ভালোভাবে থাকা সম্ভব এদের! এরজন্য অবশ্য বেতন পায় নমিতা। কিন্তু ইদানিং এক বায়না শুরু হয়েছে তার। বিথির মতো সবকিছু চাই তার। বিথি যে বেড কভারটা আনলো সেদিন সেল থেকে এমন একটা চাই তারও অনলাইনে একটা বাড়িতে পরার চপ্পল আনলো বিথি। অমনি নমিতাও বায়না ধরলো। তারও চাই এমন একটা চপ্পল অগত্যা মুখে কিছু বলতে না পেরে ভেতর ভেতর রাগে পুড়তে থাকে বিথি।

    নমিতা কাজ কর্মে খুব চটপটে। বিথির সকল ফাই ফরমাস হাসি মুখে পালন করে। সবাই বলাবলি করে ভাগ্য করে এমন কাজের মেয়ে পেয়েছে বিথি। কিন্তু এর বিনিময়ে যে কত কিছু সহ্য করতে হচ্ছে বিথিকে সেটা কে বুঝবে। বিথির নীল রঙের নাইটি দেখে এখন নমিতারও চাই এমন একটা নাইটি। আড়ালে দীর্ঘশ্বাস ফেলে খুঁজে পেতে এনে দিতে হলো এমন একটা নাইটি। মনকে বোঝালো দুধ খেতে হলে গরুর লাথিকে মেনে নিতেই হয়। তবে নমিতা প্রথম যেদিন এ বাড়িতে কাজ করতে এসেছিলো সেদিন চায়ের কাপ হাতে মাটিতে বসেছিলো। বিথিই তখন বলে ছিল - এমামাটিতে কেনো বসলে গো... চেয়ারে এসে বস। আমরা সবাইকে সমান দেখি যদিও একথা মন থেকে বলেনি সে। পরিস্থিতি তাকে বাধ্য করেছিলো। যেকোনভাবে নমিতার মন জয় করতে হবে। কাজের মেয়ে পাওয়া যত কঠিন এরচেয়ে কঠিন একে টিকিয়ে রাখা। আর তাই আদর দিয়ে দিয়ে সে নিজেই নমিতাকে মাথায় তুলে।

     বিথির মেয়ে কেয়া ক্লাস নাইনে পড়ে। অনেক কষ্ট করে নমিতাও ওর মেয়েটাকে স্কুলে পড়ায় ।  দুটো বাড়িতে এক্সট্রা কাজ করে মেয়ের প্রাইভেট টিউশনের পয়সা জোগাড় করে। স্বপ্ন দেখে কেয়ার মতো একদিন তার মেয়েও দিদিমণি হবে ইস্কুলের। বিথির বড্ড রাগ হয় এসব শুনলে। শখ কতোকাজের মেয়েতেনার মেয়ে নাকি আবার ইস্কুলে পড়াবে…। চাপা রাগ গোপন করে নমিতার সামনে। আড়ালে গজগজ করে। কেয়া আর ওর বাবা হাসে। বিথির এসব ওরা বুঝতে চায় না। বরং কেয়া হেসে হেসে বলল - কি হয় মা, নমিতাদির মেয়ে দিদিমণি হলে? এত কষ্ট করছে নমিতাদিমেয়েটা চাকরি পেলে ওরা তো একটু ভালো থাকতে পারবে।

    কি হয় সেটা বিথিও ঠিক বুঝতে পারে না। কেমন যেন মনে হয় সে হেরে যাবে নমিতার কাছে। সেই হার যে কিসের হার সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। তবে একদিন সকালে নমিতা হেরে গেলো। কাঁদতে কাঁদতে বলল তার মেয়েটা পাড়ার একটা মোটর মেকানিকের সাথে পালিয়ে গেছে। বোধহয় ওরা বিয়ে করেছে। বিথি নমিতাকে সান্ত্বনা দিলো। কি আর করাযার যেমন কপাল…। নমিতার বুক ফাঁটা আর্তনাদ আর বিলাপের ফাঁকে বিথির বুক থেকে একটা নিশ্চিন্তের নিশ্বাস  বেরিয়ে এলো।

শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪

অপেক্ষা

 


।। অভিজিৎ দাস ।।

 

আকাশ পানে চাহিয়া আমি,

 চাঁদের আলোয় গা ভাসাই।

 আলোর স্পর্শে তোমায় খুঁজে,

 পূর্ণিমা দিয়ে মন জুড়াই।

 

 আমি মগ্ন হলাম তোমার প্রেমে,

 হৃদয়ে তোমার বাঁধবো ঘর।

 আমি সন্ধ্যাতারা হয়ে রবো,

 যদি না করো আমায় পর।

 

 তোমায় তারার মত সাজিয়ে নেব,

 ঘর করবো আলোকিত।

 তোমার আলোর জ্যোৎস্না মেখে,

 মন করবো পুলকিত।

 

 আমার হাতে তোমার হাতটি রেখে,

 পার করিব দিগন্ত।

 তোমার আশায় বসে থেকে,

 মন হয়েছে উড়ন্ত।

রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

এক নতুন সকাল

 


।। সুলতা রানি দাস ।।

 

আমরা দেখেছিলাম এক নতুন সকাল

দেখেছিলাম  এক নতুন রবি

 বুকের মধ্যে রক্ত নিয়ে

লড়েছিলাম স্বাধীনতার লড়াই

 

আমরা শুনেছি শহিদের জয়গান,

হাসতে হাসতে যারা হয়েছে শহিদ

 দিয়েছে বলিদান।

 

আমরা বুনেছিলাম ঐক্য আর  শান্তির পরিধান

সকল জাতি, ভাষা বর্ণ

আমাদের জন্যে সমান।

 

আমরা সবাই ভারতবাসী, গাই বিজয়ের জয়গান,

নিজের সুখের জন্যে কখনো

করবো না অন্যের উপর প্রহার।

 

আমরা এই শপথ নিয়ে গড়বো নতুন স্বপ্ন,

হিংসা-দ্বেষ মুছে দিয়ে

 নেবো একে অপরের  যত্ন।

মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

প্রতিভার আলোক শিখা

 


- সপ্তমিতা নাথ

শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছিল সেদিন মেয়েটি। সবে মাধ্যমিকের ফলাফল বেরিয়েছে। এই উষ্ণ অভ্যর্থনার উষ্ণতা সহ্য করে উঠতে পারে নাই , বিশেষ করে চোখ দুটি, রক্তিম ঝলসানো চোখে ভেসে উঠেছিল অতীতের ছেঁড়া, ফাটা, ভাঙ্গা কালো পর্দার স্মৃতি। গোটা উপত্যকার ছোট বড় সংগঠন ব্যক্তি বিশেষ আজ প্রতিভার পাশে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু  প্রতিভা  কি চায়? প্রতিভার কী চাওয়া উচিত বা অনুচিত সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আত্মবিশ্বাসটুকু গড়ে ওঠার আগেই দুমড়ে মুছড়ে ভেঙ্গে দিয়েছিল তার শৈশব।  সে আর  কেউ না  তারই নিজের পিতা । প্রতিটি মেয়েরই শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের প্রথম নায়ক তার বাবা, কিন্তু কেন প্রতিভার ক্ষেত্রে তা বিপরীত! কেন তার বাবা নায়ক না হয়ে খলনায়ক এর প্রতিছবি হয়ে আজ চোখের অশ্রু হয়ে ভেসে গুলিয়ে যাচ্ছেন তার এই খুশির দিনে?

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যখন কক্সা তিন এ, রোজ রাতের মতই সেই রাতও কালো ছিল কিন্তু নেমে এসেছিল অঘোর অমবস্যা, প্রতিভার জীবনে। প্রতিবারের মত মদাসক্ত বাবা ঘরে এসে মাকে প্রতিদিনের নিময়ের  প্রহার সেরে  বিশেষ করে যে কাজ সম্পাদন করলেন সেটি হলো প্রতিভার সমস্ত বইপত্র উনুনে দিয়ে জ্বালিয়ে ফেলা সেদিন থেকেই শুরু হলো প্রতিভার জীবনের পিছিয়ে যাওয়ার উন্নতির দিনগুলো।

রোগাক্রান্ত মা আর বাবাকে নিয়ে সংসার। বাবার সিদ্ধান্তই সর্বোপরি। আর আত্মীয়-স্বজন ও সমাজ? সে তো আগে থেকেই ছাপ নিয়ে বসে আছে প্রান্তিকের, কাজেই প্রতিবাদ তো প্রশ্নই ওঠে না। এ তো এক স্বাভাবিক ও দৈনন্দিন ছবি এই সমাজের। ধীরে ধীরে বয়স বাড়তে থাকে সময়ের টানে হঠাৎ একদিন সার্ভে করতে এসে শিখা ম্যাডামের হাতে পড়ে যায় প্রতিভা। সরকারি কর্মজীবী, শিক্ষা বিভাগের বিশেষ প্রশিক্ষণ সেন্টারের প্রশিক্ষক। শিখা মেয়েটিকে দেখেই তার খোঁজ খবর নিলেন এবং তার ইতি বৃত্তান্ত জেনে তার মা এর কাছে অনুমতি চাইলেন। মেয়েটিকে তার বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরে নিয়ে যাওয়ার।  কিন্তু অক্ষম মা পিতার অনৈতিক কাজের ভারে আড়ষ্ট। সেখানে বাবাকে না জানিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার আস্বস্ত করলেন শিখা ম্যাডাম প্রতিভার মা প্রণতিকে।

প্রতিভার জীবন শিখার আলোতে আলোকিত হতে শুরু হলো।  ব্রিজ কোর্স শেষ করে বয়স অনুযায়ী ক্লাসে ভর্তি হলো শিক্ষার অধিকার আইনের আওতায়। কিন্তু নিয়তির খেলা অন্য এক গল্প লেখার  ফন্দি আঁটছে। যার ভয় ছিল সেই বিপত্তি ঘটলো। মেয়ে স্কুলে যাচ্ছে সে সংবাদ বাবার অগোচরে থাকলো না  তারপর ঝরাক্রান্ত এক রাতের তুমুল  সংঘাতের পর এবার মা ও মেয়ে গৃহহীন এবং আশ্রয় হলো মামার বাড়িতে।

কিছুদিন বেশ ভালোই কাটলো তারপর শুরু হলো ভাইয়ের দৈমাত্রিক ব্যবহার । ভাইয়ের  পরিবারে দিদির অতিরিক্ত খরচের বোঝা কে বইবে? অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা বাবদ টাকা কোথা থেকে আসবে? জীবনের ঘাত প্রতিঘাতে ঢালের মত খাড়া শিখার কাছে গেল প্রতিভা। তবে এবার অনেকটাই শক্ত পোক্ত মানসিকতা, যেকোন পরিস্থিতিতেই পড়া চালিয়ে যাবে । শিখার মনোবল যেন ফোঁয়ারার মতো উচ্ছাসের সাথে বেড়ে গেল সেদিন, যা চেয়েছিল তাই  বুঝি হলো। সে দেখতে পেয়েছিল প্রতিভার  মধ্যে অঙ্কুরিত হচ্ছে  আত্মবিশ্বাসের বীজ।

প্রতিভার জীবনের আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্ভুদ্ব করলেন শিখা ম্যাডাম। বললেন এবার তোর পড়াশোনা সাথে সাথে সাবলম্বী হতে হবে ব্যবস্থা কি? ‘সেটা আমি করে দিচ্ছি, ছোট ছোট ছাত্রদের পড়াবি আমি সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি  শুরু হলো নতুন যাত্রা কিন্তু নিয়তি আরো কিছু চাইছে প্রতিভার কাছ থেকে। দিন দিন অবহেলা বাড়তে থাকলো মামার বাড়িতে। প্রতিভা এতদিনে অনেক শক্ত, তাই শিখা ম্যাডামের পরামর্শ নিয়ে আত্মীয়তার যবনিকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলো প্রতিভা। মাকে নিয়ে বেরিয়ে গেল অজানা ঠিকানায়। ছোট একখানা  ঘর ভাড়া  করলো। এবার দায়িত্বও কর্তব্যের ভাড় অনেকটাই  যা সামলাতে শুধুমাত্র ছাত্র পড়ানো দিয়ে সম্ভব নয়। কারণ যে ছাত্রগুলো পড়াতো তারা তো সেই প্রান্তিক সমাজেরই কাজেই আর্থিক সহায়তায় বা পারিশ্রমিক খুবই সামান্য। বড় বাবুদের দ্বারস্ত না হলে মায়ের ঔষধ, ঘর ভাড়া ও দুজনের পেট ভরে দুবেলা খাওয়া হয়তো সম্ভব নয়। অবশেষে বাধ্য হলো প্রতিভা বাসন ধোওয়া ও কাপড় কাঁচার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে, বড় বাবুদের ঘরে। সকালে কাজ সেরে স্কুলে যায় ও দুপুরে মা এ ঝি ত্র দুটা খেয়ে বসে পড়ে ছাত্র পড়াতে কথায় আছে আলস্যই দৈন্য দীনের প্রসূতি ও পরিশ্রমই সফলতার সোপান। সকলের সহায়তা ও সহযোগিতায় প্রতিভা বড় কলেজে ভর্তি হলো।

                আজ বিফলতার সাথে সমরযুদ্ধে জয়ী প্রতিভা কৌশল শিখে গেছে বিপদের সাথে কিভাবে শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে হয়। তাহলে কি সে সফল? তার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলির পেছনে যারা  রয়েছেন তবে কি তাদের ধন্যবাদ জানানো দরকার? নাকি বয়সের আগে প্রাপ্তমনস্ক হয়ে যাওয়ার জন্য কিংবা তার শৈশব কেড়ে নেওয়ার জন্য তাদের দোষারোপ করা উচিত? আজ মানসিক ভারসাম্য সামলাতে পারছিল না, প্রতিভার দুই চোখ বেয়ে অশ্রু ধারা বইছে। ঘরের এক কোনাতে লুকিয়ে রেখেছে প্রতিভা নিজেকে! যখন বাইরে বিভিন্ন সংগঠন, ব্যক্তি-বিশিষ্ট সবাই দাঁড়িয়ে আছেন ওর সাথে দেখা করে সাহায্যের হাত বাড়াতে। পত্রপত্রিকা সংবাদ মাধ্যম সব কিছুতেই প্রতিভা তার সমরযুদ্ধের কাহিনী ও মাধ্যমিকের ফলাফলের জন্য শীর্ষে।

প্রতিভার প্রদীপ, শিখার দীপ্তিমা, আলোক না পেলে হয়তো ডুবে যেতো  অতল অন্ধকারে । অন্ধকারের সমাবেশে এরকম আরো অনেক শিখাই আলোকিত করতে পারবে হাটে , দোকানে  রাস্তায় রোজ দেখা পাওয়া বিবর্ণ প্রতিভাগুলোকে। হয়তো বা যদি কখনো হঠাৎ ছিটকে পড়ে কোন প্রদীপের অল্প আলোক শিখা ।


রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

বসন্ত

 


- মঞ্জরী রায় হীরামণি

            বসন্ত নাকি ঋতুরাজ! বসন্তের কোকিল আর রঙের বাহারে প্রকৃতি নাকি অপরূপা হয়ে ওঠে। এমনটাই স্কুলের রচনা খাতায় ব্ল্যাকবোর্ড থেকে টুকে এনেছিল  শুভা। সে থেকে শুভা জানে কোকিল যখন কুউউ করে ডাকে তখনই বসন্ত আসে। বসন্তের সৌন্দর্যকে  চারপাশে খুঁজে ফিরে।

            ঝাটিঙ্গার তীর ঘেষে শিমুল মন্দাররা যখন ফুলে ফুলে সেজে ওঠে, তখন শহর থেকে দলে দলে মানুষ আসে শুভাদের এই ইটখোলা গাঁয়ে। তারা বসন্তের শোভা দেখেন। ক্ষীণস্রোতা ঝাটিঙ্গায় নেমে জলকেলি করেন। ছবি তোলেন। কিশোরী শুভা আলগা থেকে দাঁড়িয়ে এসব দেখে। ওদের কথাবার্তাও কানে আসে। এমন কী মাঝে মাঝে ছবি তোলার জন্য শুভা আর ওর  সঙ্গী সাথীদের ছবিও তোলেন তারা। শুভারা অবশ্য এতে খুশিই হয়। কারণ নিজেদের ওমন ঝলমলে ছবি মোবাইলে তো ওরা তুলতে পারে না। ওই ছবিগুলো যখন উনারা কাছে ডেকে মোবাইলে দেখান তখন নিজের ছবিকেই কেমন যেন অচেনা মনে হয়। এ ছাড়া চিপস্ চকোলেট বিস্কুট ইত্যাদির প্রাপ্তিও ঘটে বটে! সব মিলিয়ে শুভার মনে হয় বসন্ত বুঝিবা একারণেই ঋতুরাজ!

ফটোবাজি আর চিপস চকোলেট পর্ব সেরে বাড়ি ফিরতে ফিরতে অবশ্য সে রং ফিঁকে হতে হতে উধাও হয়ে যায়। মা প্রচুর বকা ঝকা করেন। ঘরে এক ফোঁটা জল নেই। পুকুরগুলো শুকিয়ে কাঠ। কূয়োর হালও তথৈবচ এ অবস্থায় ঝাটিঙ্গার ক্ষীণ স্রোতই ভরসা। ছোট্ট ভাইটিকে ঘরে রেখে মা তো জল আনতে যেতে পারেন না। শুভাকেই প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে নদীর চড়াই উতরাই ভেঙে জল আনতে হয়। শুভা যদি সেই এক কলস জল আনতেই আধ বেলা কাটিয়ে দেয় তাহলে মা তো আর তাকে মন্দার ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানাতে পারেন না!  অগত্যা...

 

প্রচুর গাল মন্দ খেয়েও শুভার দুচোখে ভীষণ স্বপ্ন। ছবিওয়ালা ওই দিদিমণিটির মতো সে-ও একদিন ওমন ঝকঝকে হলুদ শাড়ি পড়বে। ঘাড়ের উপর থাকবে আলতো খোঁপা। আর তাতে গুঁজে দেবে লাল মন্দার...

শুক্রবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

দূরত্বের নির্জনতায়

 


   ।। চন্দ্রিমা দত্ত ।।

 

সবকিছুর সাথে দূরত্ব বেড়ে গেলে

বুঝি, কোনও এক ঝড়োরাত্রি আসন্ন-

মনে হয়  যে ক্ষত শুশ্রুষাযোগ্য  নয়

তারজন্য  অকারণ চিন্তা কেন?

সবার জন্য আরোগ্যনিকেতন নয়

আনন্দনিকেতনও নয় ...

 

দূরত্ব এক আগুনরেখা, ঝলসে যায় পা,

দূরত্ব এক উদাস-আখড়ার ক্লান্ত সুরে

বৈষ্ণবীর  বিষাদ-যাপন কথা ...

যা চলে যায় যেতে দিতেই হয়

যে থাকবে না সে যাবেই সুদূর

আদর্শ, স্বপ্ন, বিপ্লবী ও বিপ্লবের উত্থান

সব-ই একদিন অর্ধসমাপ্ত গল্পে থেকে যায়,

হারিয়ে যায়, 'স্মৃতিঘর' পরে রয় একা নির্জনে ...

 

দূরত্বে ও নির্জনে  রচিত হয় যে বন্ধুত্ব

অন্তহীন প্রবাহে মায়া-জীবনে এটুকুই সত্য –

শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৩

প্রতাপ এর কথা



।। মঞ্জরী হীরামণি রায় ।।

শৈলেন দাস বরাক উপত্যকার সাহিত্য চর্চায় এক পরিচিত নাম। শৈলেনের কবিতা আমি প্রথম ওঁর কন্ঠেই পাঠ শুনেছিলাম শনবিলে একটি অনুষ্ঠানে। সেদিন আমার সাথে ছিলেন আরও এক তরুণ কবি  মৌপিয়া চৌধুরী।  আমরা দুজনেই মুগ্ধ হয়েছিলাম একটাই কারণে, কারণ  শৈলেনের কলম শিকড়কে আঁকড়ে ছিল। দীর্ঘ দিন ধরে শহরে পড়াশোনা এবং বসবাস শৈলেনের, কিন্তু তিনি শিকড়কে ভুলে যাননি। তাই তো তিনি লিখতে পারেন ---

" হাওর জলাভূমি চাষবাস
নদী ঝিল বিল এবং মাছ
এসবই আমার লিগ্যাসী এখন
এমনটাই সবার ধারণা এবং বিশ্বাস।
তবে জেনে রাখা ভালো এবং প্রয়োজন
সামাজিক ন্যায়, সুশাসন সংস্থাপনে
অন্ত্যজ শ্রেণীর একটি বিদ্রোহই
আমার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। "

আর ঠিক এ কারণেই তিনি পত্রিকা করছেন।  'প্রতাপ' শৈলেনের ঐকান্তিক চেষ্টায় সত্যিকার অর্থেই একটি অবহেলিত জনগোষ্ঠীর "সমাজ ও সাহিত্যের প্রতিভাস"। তা বলে কী প্রতিষ্ঠিত লেখকরা লিখছেন না?  অবশ্যই লিখছেন। এ উপত্যকার যাঁরা বিশিষ্ট, যাঁরা উত্তর পূর্বাঞ্চলের সীমানা অতিক্রম করেছেন সাহিত্য কৃতিতে তাঁরাও কিন্তু 'প্রতাপ' -য়ে লিখছেন। আর এটাই আমাদের বরাক উপত্যকার সৌহার্দ্য, পাশে থাকার স্পর্ধা।

#৯ম_উত্তর_পূর্বাঞ্চলীয়_বাংলা_ছোট_পত্রিকা_সম্মেলন --য়ে  যে সংখ্যাটি উন্মোচিত হলো, সেটি 'প্রতাপ' এর চতুর্দশ প্রকাশ। ২০১২ থেকে পত্রিকাটি শৈলেন অনিয়মিতভাবে বের করে যাচ্ছেন। এবারের সংখ্যাটি সাজিয়েছেন  কবিতায়  কবিতায়। এ'তে লিখেছেন রানা চক্রবর্তী, সুজিৎ দাস, দোলনচাঁপা দাস পাল, সুশান্ত ভট্টাচার্য,  স্মৃতি দাস, বিশ্বরাজ ভট্টাচার্য,  শতদল আচার্য, নীলাদ্রী ভট্টাচার্য, মঞ্জরী হীরামণি, শৈলেন দাস, দেবলীনা রায়, আব্দুল হালিম বড়ভুঁইয়া, কুসুম কলিতা, সুখেন দাস, আনুয়ারুল হক, সুশীল দাস, সজল দাস, চন্দন ঘোষ, বিষ্ণুপদ দাস, পিংকি দাস, মানসী সিনহা, সুচরিতা দাস, ধ্রুবজ্যোতি মজুমদার, দেবরাজ শুভ, সুরজ কুমার নাথ,  জয়মনি দাস। 

প্রতিষ্ঠিত কবিদের সাথে এখানে একেবারেই নূতনরা লিখেছেন। লিখেছেন পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর প্রতিভাবান  ছেলে-মেয়েরা। সম্পাদকের সামান্য কথাও রয়েছে। ছোট্ট করে  প্রচ্ছদও রয়েছে ৮ পাতার এই অণু পত্রিকাটিতে। 

এগিয়ে যাও শৈলেন ; এগিয়ে নিয়ে চলো প্রান্তিক জনদের।  অফুরান শুভেচ্ছা সহ পাশে আছি।

সোমবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২৩

প্রতাপ- এর গান ভাসে হিজলের ছায়ায়



।। শর্মিলা দত্ত ।। 
‘প্রতাপ’ এগিয়ে চলেছে ........
এবং বহুদূর তার যাত্রা --- এ আমাদের একান্ত বিশ্বাসের উচ্চারণ।

‘একটি ভাটিয়ালি গান থেকে আমার জন্ম
বহু যুগ আগে, পদ্মানদীর বুকে, আমার এক পূর্বপুরুষ—
এক কৈবর্ত পুরুষ- এক বলিষ্ঠ ও উদাসীন ইলিশ-শিকারী মাঝি
শেষ রাতে, টিপ টিপ বৃষ্টির ভিতরে,
প্রবল ঘুর্ণিময় নদীজলে শক্ত হাতে বৈঠা টেনে টেনে
একটি ভাটিয়ালি গান গেয়েছিলেন—

সেই গান থেকে আমার জন্ম
আমার পিতৃ-পিতামহের
মাতৃ-মাতামহের জন্ম .....' (আত্মপরিচয়, রনজিৎ দাশ)
এমনই মানব জন্মের মানবতার বহুধা কথা নিয়ে ‘প্রতাপ’- এর চলমান সাহিত্যজীবন। সম্পাদক দৃপ্তকণ্ঠে আমাদের জানিয়েছেন, ‘শহরকেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চার আসরের সাথে গ্রাম-বরাকের যোগসূত্র গড়ে তোলাই ‘প্রতাপ’-এর উদ্দেশ্য'।— এমন কথা বহু পত্রিকার সম্পাদকীয়তে প্রথমে উচ্চারিত হতে দেখা যায় কিন্তু পরে— এবং ক্রমশ তা অপসৃয়মান কিন্তু অবশ্যই ব্যতিক্রম ‘প্রতাপ’। প্রতাপ এর পাতা জুড়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ জলজ অঞ্চল - শনবিল, চাতলা হাওরের অজস্র কথকতা। তরুণ প্রজন্মের এমন লেখার প্রবণতাকে আন্তরিকভাবে কুর্নিশ করি। স্যালুট জানাই সম্পাদককে যিনি প্রতিনিয়ত উৎসাহ এবং তাগাদা দিয়ে ভালবেসে লিখিয়ে নেন তাদের কলমে বহু সুখ-কথা কিংবা দুঃখগাথা, বঞ্চনার স্বরলিপি অথবা হিজলের ছায়ায় নদীর সাথে ঘাটের সখ্যতার কথা। এ-সবই রয়েছে ‘প্রতাপ’-এর পাতা জুড়ে।

গ্রাম-রাকের ছোট দুধপাতিল, শ্রীকোনার সাহারজুম, দ্বিগরশ্রীকোনা, বিস্তীর্ন চাতলার শ্যামপুর, হরিনগর, রাজপুর, বাঘমারা, রতনপুর এলাকার লেখকরা লিখে চলেছেন তাঁদের অনুভব ও ভাবনার কথা। তাঁদের এই লিখে যাওয়াই-অমাদের কাছে আগামীর প্রত্যয়। সময়, কাল তাঁদেরকে যে যার মতো করে তুলে ধরবে অবশ্যই।
সম্পাদক ‘প্রতাপ’ – এর মাধ্যমে বারবার অনুরোধ রেখেছেন নবপ্রজন্ম যেন নিজেদের এলাকার সমৃদ্ধ ভাবনাকে, লেখনীতে তুলে ধরেন। ‘গ্রাম-বরাকের নতুন প্রজন্ম ‘প্রতাপ’ কে নিজেদের প্রতিভা প্রকাশ করার প্রাথমিক মাধ্যম হিসাবে গ্রহন করলেই স্বকীয়তা বজায় থাকবে পত্রিকাটির, সার্থক হবে পত্রিকা গোষ্ঠীর নিরলস প্রয়াসের'- সম্পদকের এ উচ্চারণ অসাধারণ! ‘প্রতাপ’- এর অন্তরনামাই এই কথাকে সমর্থন করে। দু'একজন খ্যাত নামা লেখক ছাড়া বাকি সবাই প্রায় তরুন প্রজন্মের এ বিষয়টাই আমায় মুগ্ধ করেছে, ‘প্রতাপ’কে প্রশ্রয় দিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। পত্রিকার মান রাখার তাড়নায় নিজের উচ্চারনের ক্ষতি করেননি সম্পাদক। মানের পরিধি, উচ্চতা – এসব বিষয়ে শেষ কথা বলার আমরা কেউ নেই। কাল-মহাকাল ঠিক চিনিয়ে দেবে আমাদের কে কোথায় আছি বা থাকবো। মাটির গল্প নিয়ে জলজ বাতাসে হিজলের ছায়ায় ‘প্রতাপ’-এর উড়ান হোক অনন্ত অসীম।

এই সপ্তাহের জনপ্রিয় পোষ্ট

আকর্ষণীয় পোষ্ট

প্রতাপ : ১৭তম সংখ্যা (পূজা সংখ্যা - ১৪৩১)

প্রচ্ছদ  :  শুভজিৎ   পাল সম্পাদকীয় ......... বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত উৎসব , দুর্গাপূজা। এই সময়টিতে বাঙালির প্রাণের মিলন , সংস্কৃতি আর ঐতিহ...