। সীমা পুরকায়স্থ ।
উনিশ, তুমি আছো ট্রেনে ঘুরে ফেরা
ফেরিওয়ালার মুখের বেসুরো গানে।
বাংলায় কথা বলা, রুমাল, টর্চ, ঘড়ি
চেইন, পার্স আদি বিক্রেতার মুখের বুলিতে
তুমি আছো কৃষকের ঘরের
অভাবী ছাত্রের বর্ণমালার বইয়ে।
ওরা মূর্খ! ইংরেজি, আসামি, হিন্দী
অনেকেই বোঝে না।
ওরা দেশ, রাজ্য, ভাষা, জাতি, ধর্ম
বিভাগের চিন্তায় বিভোর নয়।
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিন রাত এক করে
নিজে বাঁচে, পরিবার বাঁচায়, দেশকে বাঁচায়।
বড়লোকের সুউচ্চ অট্টালিকা গড়ে নয়,
বাঁচায় মাটি - গ্রামের ক্ষেতে, বৃহদাকার বটবৃক্ষে।
সুরক্ষিত করে প্রাণের ভাষা - নবান্ন উৎসবে,
লোক সংস্কৃতিতে, লোক গানে।
। রাহুল দাস।ওহে শহীদ,তোমাদের কাছে আমরা ঋণীকৃতজ্ঞ থাকবো চিরকাল।রক্ষা করতে বঙ্গ মায়ের সম্মানহাসতে হাসতে তোমরা করে দিলেকত সতেজ প্রাণের বলিদান।মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায়কত না করলে লড়াই,অবশেষে রেল জংশনেজীবন উৎসর্গ করলে,একটি ভগিনী আর দশটি ভাই।
ওহে শহীদ,তোমাদের কাছে আমরা ঋণীকৃতজ্ঞ থাকবো চিরকাল।ওহে অমর শহীদ তোমাদের চরণেজানাই আমি শতকোটি প্রণামআশীর্বাদ করুন আমাকেযেন আমিও রক্ষা করতে পারিআমার মায়ের সম্মান।
। সপ্তমিতা নাথ ।
ফাগুনের রং লাগিয়ে সবে গেল বসন্ত ,
কোন তান্ডবের জোয়ার নিয়ে বৈশাখ দ্বারে দ্বারস্ত,
যে স্টেশনে ছুটে যায় সবাই বরণ করিতে অতিথি আগন্তুক,
সেই স্টেশনেই শেষ ঠিকানা ফেরাতে মাতৃভাষার তরী ডুবন্ত।
রাজপথে সেদিন লাঞ্চিত মা, হয়ে তার ভাষা ছারখার
তপ্ত রোদে হঠাৎ হলো বৃষ্টিবিহীন বজ্রপাত,
যখন ওরা কারা করলো ভাষার শরীরে আঘাত।
বরাক সেদিন স্তব্ধ বধির, গভীর নিরাশায়
কেমনে বইবে? গাইবে? কলকল নীরব বিদিশায়
হাজার পাখির সুরের মূর্ছনা মুছে গেল
বেদনায়, স্কুল-কলেজের সিলেট পেন্সিল
ব্ল্যাকবোর্ডও কথা দিল কথা না বলার।
তবে ভাইয়েরা হাল ছাড়েনি হার মানেনি
মিছিলের পর মিছিল করে বুক পেতে দিতে ওরা পিছায় নি।
রাউন্ডের পর রাউন্ড পটকা ফাটিয়ে আনন্দ করতে ওরাও থামেনি !!
রক্ত হাতে একে অপরে ধরে দশ ভাই এক বোন
মাটিতে লুটায়, তবুও মাকে লুটাতে দেয়নি।
বিরাট আয়োজনে তারাপুর রেল স্টেশন থেকে,
প্রেমতলা দিয়ে ভাষার ভাষা প্রেম রক্ত বয়ে যায়।
বিজয় কলসে প্রেম ধারা ভরে রাখে সবাই,
উনিশ এলে কলস খুলে নিজেকে নিজে রক্ত তিলক পরায়।
। পুষ্পিতা দাস ।
৬১ আর ৭১ এ যারা,
ত্যাগ করেছেন নিজ প্রাণ।
তাদের জন্য গাইছি আমরা,
উনিশ, একুশের গান।
দুই বাংলার বীর শহীদদের জানাই,
আজ শতকোটি প্রণাম।
তোমার জন্য হয়েছে আজ,
বিশ্ব বাংলার নাম।
রবী আমার অহংকার,
নজরুল আমার ভালোবাসা।
তোমাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে,
পেয়েছি এই বাংলা ভাষা।
। জয়ন্তী দত্ত ।
ওগো তোমরা শোনো
কান পেতে শোনো
ঐ শোনা যায় মহাকালের ডাক
খড়্গ হাতে উদ্যত, করিতে ছেদন
আমাদের সাধের বাংলাভাষা।
কান পেতে শোনো
মহাকালের বারতা। হিংসাস্রয়ীর কপটতা
আগ্রাসনে লিপ্ত চিত্ত
ধূর্ত শকুনীর দলের ভাবনা
কিভাবে করা যায় নির্মূল
মাতৃ দুগ্ধ সম মোদের মাতৃভাষা।
তোমরা কান পেতে শোনো
যে শ্লোগান মুখরিত ছিল তোমাদের বিজয় ধ্বনি
যাতে পেল স্হান মাতৃভাষা।
লাঞ্ছনার কবলে পড়ে সে
যন্ত্রণায় কাতরায় তবু ছাড়ে না নিজ অধিকার,
"রক্ত দেবো তবু জবান দেবোনা"।
এখনো আছে প্রতিবাদে মুখর
তোমরা কান পেতে শোনো।