ক্ষত
সাতটি দশক আগে ভাগ হলো দেশ
সব ধ্বংস রাজনীতির পাশা খেলায়,
ক্ষমতার লিপ্সায় ওরা দিল কূটচাল
মানুষও উঠলো মেতে ধর্মের নেশায়।
স্বাধীনতার রব উঠলো যে চারিদিকে
ধর্মের ভিত্তিতেই চাই আলাদা ভূখণ্ড,
রাজনীতির ব্যবসায়ীরা তো হর্ষল্লাসে
নিজের তাগিদে দেশ করলো দ্বিখণ্ড।
পূর্ব পুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে অনেকে
ক্ষত নিয়ে নতুন ঠিকানায় দিল পাড়ি,
কোথাওবা পড়ে রইল সোনার ফসল
কতো কতো জমিদারের দালান বাড়ি।
কতো স্ত্রীর মুছে গেল সিঁথির সিঁদুরটা
কোল খালি হলো যে অনেক মায়ের,
ভাইটা হারালো প্রিয় ভাইকে চিরতরে
সম্ভ্রম হারাতে হলো কতো যে বোনের।
বুকে ক্ষত নিয়ে নতুন স্থানে নতুন করে
শুরু হল যে জীবনের আরেক সংগ্রাম,
ফের নিজেকে স্বদেশী প্রমাণের পালা
তাইতো ছুটছে অনেকের কালো ঘাম।
পূর্বপুরুষ ক্ষত নিয়ে হলেন বাস্তুহারা
উত্তরাধিকারী আজও তা বয়ে চলছে,
অজানা ভয়ে যে মরছে তিলে তিলে
শেষ ঠিকানাও কি হারিয়ে যাবে পাছে?
সারেনি তো এখনো পর্যন্ত কত জনার
সাত দশক আগেকার ওই পুরনো ক্ষত,
প্রমাণের গ্যাঁড়াকলে পিষ্ট হয়ে ফের কি
নতুন ক্ষত বুকে নিয়ে হতে হবে বাস্তুচ্যুত?
...
অনুকরণ
যদি কাউকে করো অনুকরণ
তবে সূর্যকে করো, চাঁদকে নয়।
সূর্যের যে কোনো বদনাম নেই
চাঁদের গায়ে কিন্তু কলঙ্ক হয়।।
চাঁদের পানে পারবে তাকাতে
যতক্ষণ তব ইচ্ছে আছে মনে।
ভরদুপুরে পারবে কি তাকাতে
নীলাভ আকাশের সূর্যের পানে?
নিজেকে গড়তে হবে সেই ভাবে
যাতে কেউ কলঙ্ক খুঁজে না পায়।
প্রতিটি পদক্ষেপে যেন তোমার
সুনামের ঔজ্জ্বল্যতাটুকু ছড়ায়।।
পাছে অনেকেই হিংসায় জ্বলবে
হয়তোবা চাইবে তোমার সর্বনাশ।
বাধা বিপত্তি পিছনে ঠেলে দিয়ে
কাজে হতে হবে সূর্য সম প্রকাশ।।
মেঘের আড়ালে কিন্তু সূর্য হাসে
ছড়ায় যে তার উজ্জ্বল বিচ্ছুরণ।
তেমনি কালো মেঘ দূরে সরিয়ে
গঠন করো তোমার এই জীবন।।