মঞ্জরী হীরামণি রায় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
মঞ্জরী হীরামণি রায় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

বসন্ত

 


- মঞ্জরী রায় হীরামণি

            বসন্ত নাকি ঋতুরাজ! বসন্তের কোকিল আর রঙের বাহারে প্রকৃতি নাকি অপরূপা হয়ে ওঠে। এমনটাই স্কুলের রচনা খাতায় ব্ল্যাকবোর্ড থেকে টুকে এনেছিল  শুভা। সে থেকে শুভা জানে কোকিল যখন কুউউ করে ডাকে তখনই বসন্ত আসে। বসন্তের সৌন্দর্যকে  চারপাশে খুঁজে ফিরে।

            ঝাটিঙ্গার তীর ঘেষে শিমুল মন্দাররা যখন ফুলে ফুলে সেজে ওঠে, তখন শহর থেকে দলে দলে মানুষ আসে শুভাদের এই ইটখোলা গাঁয়ে। তারা বসন্তের শোভা দেখেন। ক্ষীণস্রোতা ঝাটিঙ্গায় নেমে জলকেলি করেন। ছবি তোলেন। কিশোরী শুভা আলগা থেকে দাঁড়িয়ে এসব দেখে। ওদের কথাবার্তাও কানে আসে। এমন কী মাঝে মাঝে ছবি তোলার জন্য শুভা আর ওর  সঙ্গী সাথীদের ছবিও তোলেন তারা। শুভারা অবশ্য এতে খুশিই হয়। কারণ নিজেদের ওমন ঝলমলে ছবি মোবাইলে তো ওরা তুলতে পারে না। ওই ছবিগুলো যখন উনারা কাছে ডেকে মোবাইলে দেখান তখন নিজের ছবিকেই কেমন যেন অচেনা মনে হয়। এ ছাড়া চিপস্ চকোলেট বিস্কুট ইত্যাদির প্রাপ্তিও ঘটে বটে! সব মিলিয়ে শুভার মনে হয় বসন্ত বুঝিবা একারণেই ঋতুরাজ!

ফটোবাজি আর চিপস চকোলেট পর্ব সেরে বাড়ি ফিরতে ফিরতে অবশ্য সে রং ফিঁকে হতে হতে উধাও হয়ে যায়। মা প্রচুর বকা ঝকা করেন। ঘরে এক ফোঁটা জল নেই। পুকুরগুলো শুকিয়ে কাঠ। কূয়োর হালও তথৈবচ এ অবস্থায় ঝাটিঙ্গার ক্ষীণ স্রোতই ভরসা। ছোট্ট ভাইটিকে ঘরে রেখে মা তো জল আনতে যেতে পারেন না। শুভাকেই প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে নদীর চড়াই উতরাই ভেঙে জল আনতে হয়। শুভা যদি সেই এক কলস জল আনতেই আধ বেলা কাটিয়ে দেয় তাহলে মা তো আর তাকে মন্দার ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানাতে পারেন না!  অগত্যা...

 

প্রচুর গাল মন্দ খেয়েও শুভার দুচোখে ভীষণ স্বপ্ন। ছবিওয়ালা ওই দিদিমণিটির মতো সে-ও একদিন ওমন ঝকঝকে হলুদ শাড়ি পড়বে। ঘাড়ের উপর থাকবে আলতো খোঁপা। আর তাতে গুঁজে দেবে লাল মন্দার...

শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৩

প্রতাপ এর কথা



।। মঞ্জরী হীরামণি রায় ।।

শৈলেন দাস বরাক উপত্যকার সাহিত্য চর্চায় এক পরিচিত নাম। শৈলেনের কবিতা আমি প্রথম ওঁর কন্ঠেই পাঠ শুনেছিলাম শনবিলে একটি অনুষ্ঠানে। সেদিন আমার সাথে ছিলেন আরও এক তরুণ কবি  মৌপিয়া চৌধুরী।  আমরা দুজনেই মুগ্ধ হয়েছিলাম একটাই কারণে, কারণ  শৈলেনের কলম শিকড়কে আঁকড়ে ছিল। দীর্ঘ দিন ধরে শহরে পড়াশোনা এবং বসবাস শৈলেনের, কিন্তু তিনি শিকড়কে ভুলে যাননি। তাই তো তিনি লিখতে পারেন ---

" হাওর জলাভূমি চাষবাস
নদী ঝিল বিল এবং মাছ
এসবই আমার লিগ্যাসী এখন
এমনটাই সবার ধারণা এবং বিশ্বাস।
তবে জেনে রাখা ভালো এবং প্রয়োজন
সামাজিক ন্যায়, সুশাসন সংস্থাপনে
অন্ত্যজ শ্রেণীর একটি বিদ্রোহই
আমার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। "

আর ঠিক এ কারণেই তিনি পত্রিকা করছেন।  'প্রতাপ' শৈলেনের ঐকান্তিক চেষ্টায় সত্যিকার অর্থেই একটি অবহেলিত জনগোষ্ঠীর "সমাজ ও সাহিত্যের প্রতিভাস"। তা বলে কী প্রতিষ্ঠিত লেখকরা লিখছেন না?  অবশ্যই লিখছেন। এ উপত্যকার যাঁরা বিশিষ্ট, যাঁরা উত্তর পূর্বাঞ্চলের সীমানা অতিক্রম করেছেন সাহিত্য কৃতিতে তাঁরাও কিন্তু 'প্রতাপ' -য়ে লিখছেন। আর এটাই আমাদের বরাক উপত্যকার সৌহার্দ্য, পাশে থাকার স্পর্ধা।

#৯ম_উত্তর_পূর্বাঞ্চলীয়_বাংলা_ছোট_পত্রিকা_সম্মেলন --য়ে  যে সংখ্যাটি উন্মোচিত হলো, সেটি 'প্রতাপ' এর চতুর্দশ প্রকাশ। ২০১২ থেকে পত্রিকাটি শৈলেন অনিয়মিতভাবে বের করে যাচ্ছেন। এবারের সংখ্যাটি সাজিয়েছেন  কবিতায়  কবিতায়। এ'তে লিখেছেন রানা চক্রবর্তী, সুজিৎ দাস, দোলনচাঁপা দাস পাল, সুশান্ত ভট্টাচার্য,  স্মৃতি দাস, বিশ্বরাজ ভট্টাচার্য,  শতদল আচার্য, নীলাদ্রী ভট্টাচার্য, মঞ্জরী হীরামণি, শৈলেন দাস, দেবলীনা রায়, আব্দুল হালিম বড়ভুঁইয়া, কুসুম কলিতা, সুখেন দাস, আনুয়ারুল হক, সুশীল দাস, সজল দাস, চন্দন ঘোষ, বিষ্ণুপদ দাস, পিংকি দাস, মানসী সিনহা, সুচরিতা দাস, ধ্রুবজ্যোতি মজুমদার, দেবরাজ শুভ, সুরজ কুমার নাথ,  জয়মনি দাস। 

প্রতিষ্ঠিত কবিদের সাথে এখানে একেবারেই নূতনরা লিখেছেন। লিখেছেন পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর প্রতিভাবান  ছেলে-মেয়েরা। সম্পাদকের সামান্য কথাও রয়েছে। ছোট্ট করে  প্রচ্ছদও রয়েছে ৮ পাতার এই অণু পত্রিকাটিতে। 

এগিয়ে যাও শৈলেন ; এগিয়ে নিয়ে চলো প্রান্তিক জনদের।  অফুরান শুভেচ্ছা সহ পাশে আছি।

এই সপ্তাহের জনপ্রিয় পোষ্ট

আকর্ষণীয় পোষ্ট

প্রতাপ : ১৭তম সংখ্যা (পূজা সংখ্যা - ১৪৩১)

প্রচ্ছদ  :  শুভজিৎ   পাল সম্পাদকীয় ......... বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত উৎসব , দুর্গাপূজা। এই সময়টিতে বাঙালির প্রাণের মিলন , সংস্কৃতি আর ঐতিহ...