।। মঞ্জরী হীরামণি রায় ।।
শৈলেন দাস বরাক উপত্যকার সাহিত্য চর্চায় এক পরিচিত নাম। শৈলেনের কবিতা আমি প্রথম ওঁর কন্ঠেই পাঠ শুনেছিলাম শনবিলে একটি অনুষ্ঠানে। সেদিন আমার সাথে ছিলেন আরও এক তরুণ কবি মৌপিয়া চৌধুরী। আমরা দুজনেই মুগ্ধ হয়েছিলাম একটাই কারণে, কারণ শৈলেনের কলম শিকড়কে আঁকড়ে ছিল। দীর্ঘ দিন ধরে শহরে পড়াশোনা এবং বসবাস শৈলেনের, কিন্তু তিনি শিকড়কে ভুলে যাননি। তাই তো তিনি লিখতে পারেন ---
" হাওর জলাভূমি চাষবাস
নদী ঝিল বিল এবং মাছ
এসবই আমার লিগ্যাসী এখন
এমনটাই সবার ধারণা এবং বিশ্বাস।
তবে জেনে রাখা ভালো এবং প্রয়োজন
সামাজিক ন্যায়, সুশাসন সংস্থাপনে
অন্ত্যজ শ্রেণীর একটি বিদ্রোহই
আমার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। "
আর ঠিক এ কারণেই তিনি পত্রিকা করছেন। 'প্রতাপ' শৈলেনের ঐকান্তিক চেষ্টায় সত্যিকার অর্থেই একটি অবহেলিত জনগোষ্ঠীর "সমাজ ও সাহিত্যের প্রতিভাস"। তা বলে কী প্রতিষ্ঠিত লেখকরা লিখছেন না? অবশ্যই লিখছেন। এ উপত্যকার যাঁরা বিশিষ্ট, যাঁরা উত্তর পূর্বাঞ্চলের সীমানা অতিক্রম করেছেন সাহিত্য কৃতিতে তাঁরাও কিন্তু 'প্রতাপ' -য়ে লিখছেন। আর এটাই আমাদের বরাক উপত্যকার সৌহার্দ্য, পাশে থাকার স্পর্ধা।
#৯ম_উত্তর_পূর্বাঞ্চলীয়_বাংলা_ছোট_পত্রিকা_সম্মেলন --য়ে যে সংখ্যাটি উন্মোচিত হলো, সেটি 'প্রতাপ' এর চতুর্দশ প্রকাশ। ২০১২ থেকে পত্রিকাটি শৈলেন অনিয়মিতভাবে বের করে যাচ্ছেন। এবারের সংখ্যাটি সাজিয়েছেন কবিতায় কবিতায়। এ'তে লিখেছেন রানা চক্রবর্তী, সুজিৎ দাস, দোলনচাঁপা দাস পাল, সুশান্ত ভট্টাচার্য, স্মৃতি দাস, বিশ্বরাজ ভট্টাচার্য, শতদল আচার্য, নীলাদ্রী ভট্টাচার্য, মঞ্জরী হীরামণি, শৈলেন দাস, দেবলীনা রায়, আব্দুল হালিম বড়ভুঁইয়া, কুসুম কলিতা, সুখেন দাস, আনুয়ারুল হক, সুশীল দাস, সজল দাস, চন্দন ঘোষ, বিষ্ণুপদ দাস, পিংকি দাস, মানসী সিনহা, সুচরিতা দাস, ধ্রুবজ্যোতি মজুমদার, দেবরাজ শুভ, সুরজ কুমার নাথ, জয়মনি দাস।
প্রতিষ্ঠিত কবিদের সাথে এখানে একেবারেই নূতনরা লিখেছেন। লিখেছেন পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর প্রতিভাবান ছেলে-মেয়েরা। সম্পাদকের সামান্য কথাও রয়েছে। ছোট্ট করে প্রচ্ছদও রয়েছে ৮ পাতার এই অণু পত্রিকাটিতে।
এগিয়ে যাও শৈলেন ; এগিয়ে নিয়ে চলো প্রান্তিক জনদের। অফুরান শুভেচ্ছা সহ পাশে আছি।