ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়েছে অনেক দিন গত হয়েছে, সাতাত্তর বছর হতে চলল।এখনকার দিনে সাতাত্তর বছর কতজন বাঁচে? কিন্তু সামগ্রিকভাবে ভারতের ঠিক ঠিক উন্নতি হয়নি। এর অনেক কারণ রয়েছে, রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের জন্য করাপশন দিন দিন বেড়েই চলেছে,সাথে ধর্মীয় কুসংস্কার, জাতিভেদ প্রথা, আর সবকিছুর মূলে রয়েছে ফালতু শিক্ষা পদ্ধতি। একটা দেশ বা একটি জাতি উন্নত হতে হলে সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। বলা হয়ে থাকে, ইংরাজ এদেশে আসার আগে ভারতবর্ষ অশিক্ষিত ছিল, অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো ছিল না, কিন্তু কথাটা কি ঠিক? ভারতবর্ষ যদি গরিব দেশ ছিল তাহলে শক, হুন,পাঠান, মোগল, ওলন্দাজ, ফরাসি, এবং শেষমেষ ইংরাজ এদেশে আসল কেন? একটা গরীব পরিবারে তো বারেবারে ডাকাত আসে না। আর ভারতবর্ষ যদি অশিক্ষিতদের দেশ হয়ে থাকে তবে কোন ইংরাজ বেদ, বেদান্ত, উপনিষদ, গীতা, ভাগবত, রামায়ণ, মহাভারত ইত্যাদি ইত্যাদি গ্রন্থ রচনা করেছেন? বৃটিশ সরকার তাদের কাজ চালানোর জন্য, কেরানী তৈরি করার জন্য যে শিক্ষা পদ্ধতি চালু করেছিল স্বাধীনতার এত বছর পরও সেই একই শিক্ষা পদ্ধতি চলছে। এই পদ্ধতিতে বেশিরভাগ অলস অকর্মণ্য বেকার তৈরি হয়। যারা সরকারি চাকরি পায় তাদের অনেকেই করাপশনে জড়িয়ে পড়ে। এইজন্যই দেশের এতো দুরবস্থা! জাপান এমন একটি দেশ যেখানে কৃষিযোগ্য ভূমি, বনজসম্পদ বা খনিজসম্পদ বেশি পরিমাণে নাই, কিন্তু দেশটি একটি উন্নত দেশে পরিণত হতে পেরেছে একমাত্র ভালো শিক্ষা পদ্ধতি গ্রহণ করার জন্য। সেখানে মানবসম্পদ তৈরি হয়, আর আমাদের দেশে বেকার তৈরি হয় কৃষিযোগ্য ভূমি, বনজসম্পদ, খনিজসম্পদ প্রচুর পরিমাণে থাকা সত্ত্বেও। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। আমার মনে হয় সঠিক শিক্ষা পদ্ধতি চালু করতে পারলে পৃথিবীর অনেক অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে, পৃথিবীটা স্বর্গে পরিণত হবে। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে শিক্ষা পদ্ধতি কেমন হলে ভালো হবে তার একটা নমুনা তুলে ধরছি। প্রতিটি জিপিতে দুটি করে সম্পূর্ণ আবাসিক বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে, একটি ছেলেদের জন্য এবং অন্যটি মেয়েদের জন্য। দশ বছর বয়সে ঐসব বিদ্যালয়ে ভর্তি হবে এবং বয়স আঠারো পর্যন্ত মোট আট বৎসর ঐসব আবাসিক বিদ্যালয়ে থেকে পড়াশোনা করতে হবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি শিখতে হবে যোগাসন, প্রাণায়াম, ক্যারাটে, কুংফু। কৃষিকাজ, গাড়ী চালানো, বিভিন্ন ধরনের মেশিন চালানো এবং মেরামত করা, কম্পিউটার, ইত্যাদি। অর্থাৎ শুধু পুঁথিগত বিদ্যা অর্জন করলেই হবে না, পরিশ্রম করা শিখতে হবে এবং অনেক ধরনের কাজ। তারপর আঠারো বছর বয়স হলে এক রুটিনে, এক সিলেবাসে সমগ্র দেশে হায়ার সেকেন্ডারী পরীক্ষা হবে, এর ফলাফল অনুযায়ী পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে অথবা এই যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি করতে পারবে অথবা স্বনির্ভর হয়ে কোনো ধরনের কাজ করতে পারবে কারণ তখন অভ্যাসগত কারণেই অলস হয়ে বসে থাকবে না। তাই দুর্নীতিপরায়ণ হবেনা। অনেক অনেক সমস্যার সমাধান এমনিতেই হয়ে যাবে।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)
এই সপ্তাহের জনপ্রিয় পোষ্ট
-
এই সময়টা আমার নয় । শৈলেন দাস । এই সময়টা আমার নয় মেঘে বাদলে জুটি কালবৈশাখী ঝড়ে তছনছ সেই ঘর যেখানে আমি থাকি। পুরো কবিতাটি পড়ু...
-
তোমারই নামে । মাম্পী দাস। আমি তো ছিলাম দুঃখে ভরা এমন এক বই যাকে নাকি খোলা দায়! পাঠক বললে তো তোমায় বলি সেরা যে বইটি শু...
-
শূন্য মনের মানুষ । মাম্পী দাস । আমি নির্জন অন্ধকারে আগাছায় পড়ে থাকা একবিন্দু শিশির সূর্য...
-
রোদেলা দুপুর । কুসুম কলিতা। দুপুরের প্রখর রোদে জর্জরিত শরীর একটু শীতল বাতাস চাই, ঝিলিমিলি করে রবির তীব্র রোদে কোনো ধরনের শান...
-
বহুরূপী । সুচরিতা দাস । আজকাল অসুরদের মুখ ঠিক যেন মানুষের অবয়ব, নেতিবাচক চিন্তা তাদের কালো ধোঁয়া হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। পুরো কবি...
আকর্ষণীয় পোষ্ট
প্রতাপ : ১৭তম সংখ্যা (পূজা সংখ্যা - ১৪৩১)
প্রচ্ছদ : শুভজিৎ পাল সম্পাদকীয় ......... বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত উৎসব , দুর্গাপূজা। এই সময়টিতে বাঙালির প্রাণের মিলন , সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের...

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন