আশা

প্রতাপ : অনলাইন-৩৭

। শিপ্রা দাশ ।

    এক অতি সাধারণ গরিব পরিবারের মেয়ে আশা। আরও পাঁচ পাঁচটা মেয়ের মতনই অনেক স্বপ্ন ছিল আশার জীবনে। সেই স্বপ্ন পূরণ হবার আগেই,গরিব বাবা পাঠশালার গণ্ডি পেরুতে না পেরুতেই বিয়ে দিয়ে দেন। সেও বাধ্য হয়ে সেই বিয়েকে মেনে নেয়। আশা স্বপ্নের জাল বুনতে বুনতেই শ্বশুর বাড়িতে প্রবেশ করে। স্বামী নিতান্তই ছোটখাটো কাজ করেই সংসারের হাল টানে। রোজকার অভাব অনটনের মধ্য দিয়েই চলতো তাদের সংসার। বিয়ের প্রায় পাঁচ বছর পর অনেক আশা নিয়েই সে সন্তানসম্ভবা হয়, গ্রামের হাসপাতালে এবং অঙ্গনওয়াড়ির তত্ত্বাবধানেই তার দেখাশোনা চলছিল। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে হঠাৎ একদিন সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আশার জীবনে এমন একটি অন্ধকার সময় নেমে আসবে ভাবতেও পারেনি। তাকে কোনরকমে গ্রামের হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে একটা বিরাট দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয় এবং গুরুতর ভাবে আহত হয়। সেখান থেকে তাকে সঙ্গে সঙ্গে শহরে নিয়ে আসতে বলা হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য, শহরের চিকিৎসাকেন্দ্রে দুইদিন থাকার পর,সে একটি মৃত সন্তান প্রসব করে, সংজ্ঞাহীন হয়ে যায়। কিছুতেই তার জ্ঞান ফিরে আসছিল না। তাকে স্থানান্তরিত করা হয় ইনটেনসিভ কেয়ারে।

            এতদিন থেকে স্ত্রীর সুস্থ হয়ে না ওঠা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিল না তার স্বামী। হঠাৎ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং নিষ্ঠুর ভাবে আশার শরীরে ছুরি দিয়ে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে। সংজ্ঞাহীন আশা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তারপর যা হবার তো তাই হয়েছে...। যে আশায় সে স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকবে বলে সুখের নীড় রচনা করেছিল, সেই আশাই তার আশা হয়ে রইল..। কী অপরাধ করেছিল আশা.. উত্তরহীন সময় অথবা ভাগ্য লিখন ..?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই সপ্তাহের জনপ্রিয় পোষ্ট

আকর্ষণীয় পোষ্ট

এগিয়ে চলো পাশে আছে অগণিত কলম

। চান্দ্রেয়ী দেব ।     ঘুম ভাঙতেই জানালার পর্দা সরাতেই চোখে দাগ কাটে পরিষ্কার আকাশে ঝকঝকে নীল রং ছড়ানো। স্নিগ্ধ হাওয়ার পরশে প্রাণ ফিরে পা...