সবুজ পৃথিবী রহস্যে ঘেরা

[প্রতাপ : ১৭তম সংখ্যা (পূজা সংখ্যা - ১৪৩১)]

সুমঙ্গল দাস

। সুমঙ্গল দাস ।

পৃথিবী কত সুন্দর যদি তাকে উপর থেকে দেখা হয়। উপর থেকে মানে আপনি যদি উড়োজাহাজ বা প্লেনে চড়েন তাহলে তার মনোরম দৃশ্য উপলব্ধি করতে পারবেন। তবে উপর থেকে জঙ্গলকে দেখতে যত সুন্দর, তার ভেতরটা কিন্তু ততটাই রহস্যে ভরা। আপনি যখন জঙ্গলে ঢুকবেন তখন দেখতে পারবেন এই জঙ্গলের ভেতরে অনেক রকমের বিষাক্ত পোকামাকড় এবং ছোট বড় হিংস্র জন্তু-জানোয়ারের সহস্রাধিক বসবাস, তাদের মধ্যে তারা সবাই একে অপরের শিকার করে জীবনধারণ করছে এবং যে শক্তিশালী বা বুদ্ধিমান, সেই পৃথিবী অথবা জঙ্গলে রাজত্ব কায়েম রাখতে সর্বদা প্রস্তুত।

তারপর দেখবেন গাছপালাও বিশাল বড় বড় আকারের। তারাও কিন্তু একই নিয়মধারা পালন করে যাচ্ছে, যেমন একটি বড় গাছ উচ্চতায় অনেক বড় এবং তার ডালপালাও অনেক বড় বড়। তার আশেপাশের ছোট গাছগাছালিকে বড় গাছের গুঁড়িতে জন্মাতে দেয় না এবং তার আশেপাশে যেগুলো গাছ আছে, তাদেরকে বড় হতে দেয় না। বড় গাছ তাদের শাখাপ্রশাখা দিয়ে সূর্যের কিরণ আটকে রাখে এবং ছোট ছোট গাছের উপর পৌঁছাতে দেয় না। সুতরাং অনেক ছোট ছোট গাছ সূর্যের কিরণ না পেয়েই মরে মাটির সাথে মিশে যায় এবং মাটিতে মিশে তার দ্বারা উর্বরতা তৈরি হয়। তারপর এই উর্বর শক্তি চুষে বড় গাছগুলি তার বিস্তার লাভ করে। এভাবেই দুর্বল এবং সবলতার মধ্যে বিস্তারকারী সঞ্চালন তৈরি করে। এসব কিছুই কিন্তু ব্রহ্মাণ্ডের গতিধারায় ধারাবাহিকতা।

এদিকে আবার বড় বড় সমস্ত পাহাড়-পর্বত ঘিরে রেখেছে বিশাল আকারের গাছপালা। তারা হয়তো ভাবছে তাদের সিস্টেমের ধারাবাহিকতার প্রতিবাদ করার ক্ষমতা তার আশেপাশের অন্য কোনো ছোট ছোট গাছগাছালির নেই এবং তারা প্রকৃতির সঞ্চালন-গতি ধারাবাহিকতার প্রতি এতোই অজ্ঞাত, তারা বুঝতে পারে না প্রকৃতির আরেকটি সৃষ্টি বাতাস—তাকে কিন্তু কেউ দেখতে পায় না এবং সে অতি কোমল, সে সদা সর্বদা বিরাজমান। সে যেমন কোমল, তার গতি বাড়িয়ে অনেক সময় তুফান নামেও সময় সময় তার আভাস দিয়ে থাকে এবং স্মরণ করিয়ে দেয় প্রকৃতির সঞ্চালন বা ধারাবাহিকতার কথা। সে অনেক সময় মুহূর্তের মধ্যে তুফান নাম নিয়ে বিধ্বংসী রূপ ধারণ করে বড় বড় সমস্ত গাছপালাকে ধ্বংস করে ফেলতে পারে। কারণ সে প্রকৃতির সঞ্চালনার এক ধারাবাহিকতা। এটা আমাদের সকলকে বুঝতে হবে এবং প্রকৃতি বা ভগবানের নিয়ম অনুসারে আমাদের সকলকে চলতে হবে।

অনেক সময় দেখা যায়, কিছু স্বার্থবাদী মানুষ তাদের বিশেষ ক্ষমতা অর্জন করে সাধারণ মানুষের উপর তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে থাকেন। বন্যপ্রাণী এবং তাদের মধ্যে একটুও ব্যতিক্রম নয়। তাই বড় বড় পাহাড়-পর্বতের মত বিশাল বিশাল কর্মসংস্থান গড়ে তুলে এবং বড় বড় গাছের মতো বিরাট বিরাট শাখাপ্রশাখা স্বরূপ দায়িত্ব দিয়ে থাকেন কিছু পদমর্যাদাধারী মানুষদের উপর। তারা কৌশলগতভাবে সঞ্চালন তৈরি করেন। তারপর ছোট ছোট গাছগাছালি যেভাবে বড় বড় গাছের শাখা-প্রশাখা দ্বারা সূর্যের কিরণ পেতে অসহায়, তদ্রূপ মানুষও পরিচালনায় থাকা বড় বড় মানুষের দ্বারা সূর্যের আলোর মত শ্রমের মূল্য পেতে অসহায়—এটাই বাস্তব।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই সপ্তাহের জনপ্রিয় পোষ্ট

আকর্ষণীয় পোষ্ট

প্রতাপ : ১৭তম সংখ্যা (পূজা সংখ্যা - ১৪৩১)

প্রচ্ছদ : শুভজিৎ পাল সম্পাদকীয় ......... বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত উৎসব , দুর্গাপূজা। এই সময়টিতে বাঙালির প্রাণের মিলন , সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের...