করির জন্মদিন

 

অঞ্জু এন্দো

'আমার এ জন্মদিন মাঝে আমি হারা

আমি চাহি বন্ধুগণ যারা

তাহাদের হাতের পরশে

মর্তের অন্তিম প্রীতি রসে

নিয়ে যাব জীবনের পরম প্রমাদ

নিয়ে যাব মানুষের শেষ আশীর্বাদ।

২৫ শে আপামর বাঙালির আত্মশ্লাঘার দিন। এ যে আমাদের প্রাণের ঠাকুর বরীন্দ্রনাথের শুভ জন্মদিন। নতুন বছর, ২৫ শে বৈশাখ, বাংলা ভাষা, উনিশের একাদশ ভাষা শহিদ যেন বিনি সুতোয় মালা গাঁথা। বাংলার নববর্ষ বয়ে আনে বাঙালির অহংকারের দিন পঁচিশে বৈশাখকে, আবার বিশ্বজুড়ে বরাকের আত্মপরিচয়ের দিন উনিশ আসে পঁচিশের জন্ম শতবর্ষের হাত ধরে। ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৯শে মে, ১৯৬১ রবীন্দ্রনাথের জন্ম শতবর্ষে একাদশটি তরতাজা প্রাণ তাঁদের বুকের রক্ত নিঙরিয়ে, অঞ্জলি দিল বাংলা ভাষার মাধ্যমে পড়াশোনা করার সরকারি স্বীকৃতি আদায় করতে। সারা বিশ্বে কবির জন্মশতবর্ষে এর চেয়ে মহার্ঘ উপহার আর কেউই দিতে পারেনি কবিকে। মৃত্যু তো চিরন্তন, অনিবার্য তবে এতো কমবড় সৌভাগ্য ও গৌরবের কথা নয়। কবির শতবর্ষের একাদশ ভাষা সৈনিকের নতুন শহিদ জন্ম হল, শহিদ জন্ম সার্থক হল।

"সূর্যস্নাত, এ যে অপরূপ জ্যোতি/

নেমে এলো ধরা তলে/

ধরি অপরূপ শিশুর রূপ ও দ্যুতি/

শোভে এ গগণ তলে।'

কৃষ্ণপক্ষের কৃষ্ণা ত্রয়োদশীর পুণ্য তিথিতে জন্ম নিলেন ভাবীকালের শুধু বাঙালিরই নন, বিশ্ব সাহিত্যাকাশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১২৬৮ সালের ২৬শে বৈশাখ (৭ মে ১৮৬১) জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে, রাত তখন ২-২৮ মিঃ ৩ সেকেন্ডে দেবেন্দ্রনাথ ও সারদাদেবীর চতুর্দশ সন্তান ৩থা অষ্টম পুত্র আকাশ আলো করে ভূমিষ্ঠ হলেন। রবীন্দ্রনাথ ২৮ শে ভাদ্র ১৩১৭তে পদ্মিনী মোহন নিয়োগীকে এক চিঠিতে লেখেন 'আমার জন্মের তারিখ ৬ মে ১৮৬১। ১৯১৮ সালের ৮ নভেম্বর রানুকে এক পত্রে লেখেন- 'ভানুঠাকুর বলে এক ব্যক্তির জন্ম তারিখ কি ভাগ্যে বহুকষ্টে মনে আছে কিন্তু তার জীবনের অন্যান্য প্রধান ও অপ্রধান ঘটনার একটা তারিখও আমার মনে নেই।' তবে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ এ প্রসঙ্গে বলেছেন- 'আমার আসল জন্মদিনে ইংরেজী তারিখটা ছিল ৬মে, বাংলা তারিখ ২৫ শে বৈশাখ।'

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম আনুষ্ঠানিক জন্মদিন পালিত হয় ১৮৮৭ সালের ৭ মে (১২২৪ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ), ৪৯ নং পার্কস্ট্রিট, কলকাতার সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়িতে। তখন কবির বয়স সাতাশ। এই সাতাশ বছর বয়স পর্যন্ত করির শুভ জন্মদিন অনুষ্ঠান পালন না করার কারণ ঠাকুর পরিবার ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত থাকায় সেই বাড়িতে কোন ধরণের পূজার্চনার প্রচলন ছিল না। এমন কি জন্মতিথি উদযাপনও সে বাড়িতে বর্জিত ছিল। রবীন্দ্রনাথের মেজদাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মেজবৌদি জ্ঞানদানন্দিনী বিলেত থেকে ফিরে আসার পর, জ্ঞানদানন্দিনী সাহেবী কায়দায় তার ছেলে মেয়েদের জন্মদিন পালন করতেন। বাড়ির সকলকে সন্ধ্যায় জলযোগে নিমন্ত্রণ করতেন। এতে খাওয়া দাওয়া উপহার প্রদানের রেওয়াজ থাকলেও কোনও পূজার্চনার বা প্রার্থনার রীতি ছিল না। কবি হিসেবে এই বয়সেই রবীন্দ্রনাথের বিশেষ একটি পরিচিতি হয়ে গিয়েছিল। 

ঘটা করে কবির প্রথম জন্মদিনের অনুষ্ঠানের উদ্যোগী ছিলেন ভাগ্নী সরলা দেবী, কবির দিদি স্বর্ণকুমারী দেবীর কন্যা। সরলা দেবী কবির জন্মদিন অনুষ্ঠান শুরু করলেন তাঁর ভক্তিপ্রাবল্যে। তাঁর লেখায় কবির ঐতিহাসিক আনুষ্ঠানিক সেই জন্মদিনের কথা শোনা যাক- "তখন তিনি ও নতুন মামা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর থাকেন মেজমামীদের সঙ্গে ৪৯ নং পার্কস্ট্রীটে।.... রবিমামার প্রথম জন্ম উৎসব আমি করাই.... অতি ভোরে উলটাডিঙ্গীর কাশিয়া বাগানবাড়ি থেকে পার্কস্ট্রীটে নিঃশব্দে তাঁর ঘরে তাঁর বিছানার কাছে গিয়ে বাড়ির বকুল ফুলের নিজের হাতের গাঁথা মালা ও বাজার থেকে আনানো বেলফুলের মালার সঙ্গে অন্যান্য ফুল ও একজোড়া ধুতি চাদর রেখে প্রণাম করে তাঁকে জাগিয়ে দিলুম। তখন আর সবাই জেগে উঠলেন। পাশেই নতুন মামার ঘর। 'রবির জন্মদিন বলে একটা সারা পড়ে গেল। সেই বছর থেকে পরিজনদের মধ্যে তাঁর জন্মদিনের উৎসব আরম্ভ হলো।'

সেই প্রথম জন্মদিনে সরলা দেবীর দাদা জ্যোৎস্নানাথ কবিকে উপহার দিলেন - 'The Poems of Heine' বইটি। বইয়ের পাতায় খুশ মেজাজে রবীন্দ্রনাথ নিজেই লিখে রেখেছিলেন- 'শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর' ২৫ শে বৈশাখ জন্মদিনের উপহার, ১৮৮৭। জ্যোৎস্নার কাছ হইতে ৪৯ পার্কস্ট্রিট।' সাড়ম্বরে না হলেও সেই জন্মদিন ওই বাড়িতে সাড়া জাগিয়ে ছিল। এরপর আমৃত্যু কবির জন্মদিন পালিত হয়েছে।

'দ্বারে আসি দিল ডাক পঁচিশে বৈশাখ।' কবির আনুষ্ঠানিক জন্মদিন এভাবেই পরিবার পরিজনের গণ্ডী পেরিয়ে দেশজুড়ে জন্মোৎসবের রূপ পেলো, ছড়িয়ে পড়ল বিদেশেও। কালিংপঙে কবির এক জন্মদিনে কবির কণ্ঠে শৈলবাস থেকে বেতারবার্তায় কবির বাণী প্রচার করা হলো, উদারকন্ঠে কবি পাঠ করলেন-

'আজ মম জন্মদিন।

সদাই প্রাণের প্রান্তপথে

ডুব দিয়ে উঠেছে যে

বিলুপ্তির অন্ধকার হতে

মরণের ছাড়পত্র নিয়ে...।'

আশ্চর্য এক ব্যতিক্রমী মানুষ রবীন্দ্রনাথ। মহামানব রবীন্দ্রনাথ যখন এই পৃথিবীতে আবির্ভূত হন, তখন মর্ত্যের মানুষ তাদের ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থে পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষে দিশেহারা। তার যা কিছু সব দিতে হবে এ কথা ভেবেই মানবপ্রেমী কবি বিশ্ববাসীকে উজাড় করে দিতেই এই মর্ত্যভূমিতে এসেছেন। 'যতদূরে দিগন্তের যতদিকে দু'চোখ ফেরাই/ সূর্য তাঁর দীপ্তি হতে কারেও বঞ্চিত করে নাই।' বিশ্ব-প্রকৃতির অন্তরে অহরহ ধ্বনিত হচ্ছে যে অনির্বচনীয়, অনাহুত ধ্বনি ও অপার্থিব সুর, তারই সন্ধান পেয়েছিলেন তিনি তাঁর জীবনে এবং তারই অবগুণ্ঠন মোচন করে লক্ষ্য করেছিলেন বিশ্বসঙ্গীতের অনন্ত ধারা ও মহিমা। রবীন্দ্রনাথের কাব্য প্রতিভার প্রধান ধর্ম এর মানবমুখীতা। 

রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যে কোনো রচনায় তাঁর কবিতা ও গানের বিষয় অবধারিতভাবে উঠে আসবে। রবীন্দ্রনাথের আসল পরিচয় তিনি বিশ্বকবি কিন্তু তিনি একজায়গায় লিখেছেন-

"ভারী কাজের বোঝাই তরী কালের পারাবারে

পাড়ি দিতে গিয়ে কখন ডোবে আপন ভারে।

তার চেয়ে মোর এই ক'খানা হালকা কথার গান।

হয়ত ভেসে রইবে স্রোতে তাই করে যাই দান।"

এক জায়গায় কবি সঙ্গীতের একটি সুন্দর ব্যাখ্যা করেছেন- আমাদের যেমন প্রয়োজন ও অপ্রযোজন এমন দুই রকমের খাদ্য রয়েছে- একটি অন্ন ও একটি অমৃত। অন্নের ক্ষুধায় আমরা মর্ত্যের সকল জীবজন্তুর সমান, অমৃতের ক্ষুধায় আমরা সুরলোকের দেবতাদের দলে। সঙ্গীত হচ্ছে অমৃতের নানা ধারার একটি।

কবিতা যেমন ভাবের ভাষা, সঙ্গীতও তেমনি ভাবের ভাষা। রবীন্দ্রনাথের জীবনদর্শন শুধু ভারতবর্ষের কেন সমগ্র বিশ্বের অন্তরাত্মার এক নিবিড় উপলব্ধি। প্রকৃতি তন্ময় কবি প্রকৃতির মধ্যেই বন্ধন এবং মুক্তিকে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত দেখেছেন। ১৩০৬ সালে কবির যখন বয়স আটত্রিশ তখন নিজের জন্মদিন উপলক্ষে প্রথম গান রচনা করেছিলেন- 'ভয় হতে তব অভয় মাঝে নতুন জনম দাও হে।' বাষট্টি বছরের জন্মেদিনে '২৫ শে বৈশাখ কবিতাটি লেখেন- ১৩২৯ (৮ মে ১৯২২)। পূরবী কাব্যের অন্তর্গত কবিতাটি। মৃত্যুর তিনমাস আগে রচনা করলেন জন্মদিন উপলক্ষে তার শেষ গান, তার জীবনেরও সর্বশেষ গান এটি। ১৩২৯ (৮ মে ১৯২২) বাষট্টি বছর বয়সে করি যে ২৫শে বৈশাখ কবিতাটি লেখেন। উল্লেখ করা প্রয়োজন সেটি পূরবী কাব্যের অন্তর্গত "রাত্রি হলো ভোর/ আজি মোর/ জন্মের-স্মরণ-পূর্ণ বাণী/ প্রভাতের রৌদ্রে লেখা লিপিখানি/ হাতে করে আনি/ দ্বারে আনি দিল ডাক/ পঁচিশে বৈশাখ।" সেই কবিতার শেষ স্তবকটিকে সামান্য কিছু পরিবর্তন এনে গানটি তৈরি হয়। পূরবী কাব্যের ২৫ শে বৈশাখের শেষ স্তবকটি - "হ্যাঁ নূতন,/ তোমার প্রকাশ হোক কুজ্ঝটিকা করি, উদ্ঘাটন/ সূর্যের মতন।/ বসন্তের জয়ধ্বজা ধরি/ শূণ্য শাখে কিশলয় মুহূর্তে অরণ্য দেয় ভরি- সেইমত, হে নূতন/

এই গানের কথাগুলি কল্পনা কাব্যগ্রন্থে জন্মদিনের গান শিরোনামে কবিতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে যদিও কবিতা ও গানের কথায় সামান্য পার্থক্য রয়েছে। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন- গানটি জন্মদিনকে স্মরণ করেই লেখা তবে শিলাইদহে বাসকালে তার আটত্রিশ তম জন্মদিনের কয়েকদিন পরে লেখা। এটিই জন্মদিন উপলক্ষে রচিত প্রথম গান। তবে যেহেতু জন্মদিনের পর রচিত জন্মদিনে গীত হয় নি। 'হে নূতন' গানটি জন্মদিনেই রচিত সেইসঙ্গে গীত তাই হে নূতনই প্রথম গান সে বিষয়ে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।

'হে নূতন' গানটি প্রসঙ্গে শান্তিদেবঘোষ লেখেন- অশীতিপর কবির এই জন্মদিনে সারা দেশ যখন মেতে উঠেছে তখন কবির কাছে তাঁর একান্ত অনুরোধ জন্মদিনের একটি গান লিখে তিনি অনুষ্ঠানটি সম্পূর্ণ করেন। অত্যন্ত স্নেহভাজন ছাত্রের অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারলেন না কবি। দপ্তর থেকে তার নির্দেশে খুঁজে আনা হলো 'পঁচিশে বৈশাখ' কবিতাটি। 'হে নূতন দেখা দিক আরবার অংশটি একটু অদল বদল করে সংযোজন হয়ে গান হয়ে উঠল।' সেদিন তাঁকে ঘিরে যারা ছিলেন তারা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি এটি তাঁর জীবনের সর্বশেষ গান।

কবির অত্যন্ত আদরের ভাগ্নি কবির সাতাশ বছর বয়সে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম কবির জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন। তা-ই ক্রমে ক্রমে জন্মোৎসবের রূপ নিয়ে কবির আশীতিতম জন্মদিনও সাড়ম্বরে পালিত হলো। রচনার দীর্ঘত্বের ত্রুটি মাথায় রেখে কবির যে জন্মোৎসব আমাকে অনেকটাই ভাবিয়েছে, তার বিবরণ তুলে ধরার লোভ সম্বরম করতে পারছিনা। 

সত্তর বছর বয়স পর্যন্ত করির জন্মোৎসব হতো না। জন্মদিবস পালন হতো ঘরোয়া পরিবেশে, আত্মীয়-স্বজন, নিকট বন্ধুদের নিয়ে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানকে ঘিরে বিচিত্রা হলে। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দৌহিত্র মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দক্ষিণের বারান্দা থেকে খবরটি জানা যায়। পয়ষট্টি বছর বয়সে কবির জন্মদিন এক নতুন ধারায় পালন করা হয়। সন্ধ্যায় যখন বিচিত্রা হলে আলো জ্বলে উঠলো কবি পাট করা ধূতি, গলায় ধবধবে চাদর ঝুলিয়ে এসে ঢুকলেন সেই হলে। পাশেই একটা প্রকান্ড পাল্লা লোহার চেইন ঝুলানো ছিল। কবি পাল্লার একদিকে তক্তায় বসলেন, আর অন্য তক্তায় বিশ্বভারতীর ছাপা রাশি রাশি বই থাকলো। কবির ওজনের মাপে স্তূপীকৃত বই উঠল পাল্লায়। উপস্থিত আপনজনেরা ছাড়া সরস্বতীর প্রাসাদ হিসেবে সেই বইগুলো নানান জায়গায় বিলিয়ে দেওয়া হলো। ৬৫ বছর জন্মদিনের কী অভিনব উদযাপনের সাক্ষী হয়ে রইলেন উপস্থিত সৌভাগ্যবানেরা।

সত্তর বছর বয়সে কবির জন্মদিনে 'জন্মজয়ন্তী' শব্দটি প্রথম চালু হয়। সেই জন্মজয়ন্তীতে আসামে আনন্দের ঢেউ লেগেছিল। শিলংও গেছেন কবি। শিলং তখন আসামের রাজধানী। রানুকে লেখা চিঠিতে শিলংয়ের প্রাকৃতিক চেতনায় তন্ময় কবির হৃদয়ানুভূতি ধরা পড়ে। ডিব্রুগড়, গৌরীপুরেও কবির পদধূলি পড়েছে। পরেনি শিলচরে। ১৯১৯ সালে প্রথম আসাম ভ্রমনে আসেন। সেবার শিলং-গুয়াহাটি- শ্রীহট্ট মিলিয়ে প্রায় তিন সপ্তাহকাল ছিলেন আসামে। রবীন্দ্র চেতনা যখন জেগেছে তখন থেকেই লেখিকার আক্ষেপ সেইসঙ্গে অভিমানী অভিযোগ, বছর দুই করিমগঞ্জবাসী তোমার চরণ স্পর্শে ধন্য হলো, শিলচরবাসী কেন বঞ্চিত তব চরণে। অথচ শিলচরের স্বনামধন্য স্বাধীনতা সংগ্রামী অরুণ কুমার চন্দ এবং কবির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন অনিল কুমার চন্দ, পিতা কামিনী কুমার চন্দ যিনি রেলওয়ের ফান্ডিং কাউন্সেলর ছিলেন। এটি শিলচর বাসীর দুর্ভাগ্য বই আর কি! 

রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গানে তার অন্তর্নিহিত ভাবনার প্রতিফলনই তার জীবন দর্শনের মর্ম কথা। সরল স্বচ্ছ বাস্তব ও সচল অনুভূতিকে নিয়েই তার দর্শন সার্থক। রবীন্দ্রনাথের প্রতিভায় জীবনের খণ্ড ক্ষুদ্র বিভিন্ন অভিজ্ঞতা সঙ্গতি লাভ করেছে কারণ জীবনকে এমন পূর্ণভাবে দেখবার এমন অখন্ডভাবে আত্মলাভ করবার ক্ষমতা জগতে দুর্লভ। মানুষের মধ্যে দিয়েই তিনি ঈশ্বরের সন্ধান পেয়েছেন, তার ঈশ্বর উপলব্ধি হয়েছে। 'তুমি আমাদের পিতা/ তোমায় পিতা বলে যেন জানি/ তোমায় নত হয়ে যেন মানি/'

কবির জন্মদিনের বিশেষ নিবন্ধ 'পঁচিশে বৈশাখ' তাই সে গানের শেষের কটা লাইন কবির লেখা শেষ গানের অংশ দিয়েই ইতি টানলাম

উদয় দিগন্তে শঙ্খ বাজে, মোর চিত্তমাঝে

            চির নূতনেরে দিল ডাক

                পঁচিশে বৈশাখ

 

তথ্য সংগ্রহ-

১) কবি জীবনী - প্রশান্ত পাল।

২) রানুকে লেখা করিব চিঠি - দেশ সারদ সংখ্যা ১৪০৯।

৩) রবীন্দ্রনাথ - অনিল চন্দ্র ঘোষ।

৪) পূরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

৫) নানা জনের রীন্দ্রনাথ - সম্পাদনা - বিষ্ণু বসু; অশোক কুমার মিত্র।

৬) রবীন্দ্র সঙ্গীতের জন্মকথা - আশিষ বরণ সামন্ত।

৭) নতুন বৌঠান - রবীন্দ্র জীবনে ও মননে - সুমিত্রা দত্ত।

৮) রবীন্দ্র কাব্য প্রবাহ - শ্রী প্রমথ নাথ বিশী।

৯। সঙ্গীতে রবীন্দ্র প্রতিভার দান - স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ।

১০) Hundred poems of Rabindranath Translated in English - Joylakshmi Devi 

১১) চরণরেখা তব

রবীন্দ্রনাথ : বরাকে শুভ পদার্পণের শতবর্ষ পূর্তিতে - অঞ্জু এন্দো (সম্পাদনা)

১২) রবীন্দ্র রচনাবলী - জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ - শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

১৩। গানের পিছনে রবীন্দ্রনাথ - সমীর সেনগুপ্ত

১৪। রবীন্দ্রনাথ গানের ভিতর দিয়ে - অঞ্জু এন্দো

১৫। দেশ পত্রিশর বিভিন্ন সংখ্যা/ বিভিন্ন পত্রপত্রিকা।

১৬। রবীন্দ্রনাথ ও অসম - ড. ঊষা রঞ্জন ভট্টাচার্য।

[প্রতাপ ঃ অনলাইন-৪]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই সপ্তাহের জনপ্রিয় পোষ্ট

আকর্ষণীয় পোষ্ট

প্রতাপ : ১৭তম সংখ্যা (পূজা সংখ্যা - ১৪৩১)

প্রচ্ছদ  :  শুভজিৎ   পাল সম্পাদকীয় ......... বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত উৎসব , দুর্গাপূজা। এই সময়টিতে বাঙালির প্রাণের মিলন , সংস্কৃতি আর ঐতিহ...