মঙ্গলা দত্ত রিমি – র দুটি কবিতা

প্রতাপ : ১৮তম সংখ্যা (পূজা সংখ্যা - ১৪৩২)

   নৌকা বিহার

উত্তর মেরুর বরফ গলা জলে সদ্যস্নাত হয় বোষ্টুমী,

নীড় ভোলা দলছুট বারবার ফিরে আসার গান গায়।‌‍‌

 

অমানিশার তিমির ভূলে অভিসারিকা হয় যে রমনী,

বিষবৃক্ষের ঝরা পাতার ঘ্রাণ টা তার খুব চেনা।‌

 

যে উঠোন জুড়ে নিমের হাওয়া বইতো রোজ,

আজ তার চারপাশে অতীতের জীবাশ্ম ছাপ।‌

 

যে সরলরেখায় প্রথম আলপনা এঁকেছিল

সদ্য বিবাহিত মেয়েটি কোজাগরী পূর্ণিমায়,

 

সেই রেখাটি আজ জটিল থেকে জটিলতর

বক্ররেখায় ঘোরপাক খাচ্ছে রোজ।

 

বেহায়া বাঁশি টাও আজ তার নাম ধরে ডাকে না,

দক্ষিণ জানালার আরশি জুড়ে দীর্ঘশ্বাসের ছাপ।

 

জ্বরের ঘোরে এখন মেয়েটি অপেক্ষা করছে 

অজানা কোনো নাবিক এর।

হয়তো অজানা নয়,  তবে পরিচয়টা এবার হবে।

 

যে ঘাটে আনমনে ঘুরে বেড়াতো বালিকাটি,

সেই ঘাটেই তার শখের নৌকায় হোক নৌকা বিহার।



                 আমার উমা

 

ভোরের বাতায়নে লাগুক শরৎ সূর্যের লালিমা

শিউলি ফুলে সজ্জিত হোক হৃদয়ের আঙিনা।

 

স্নিগ্ধ হাওয়ায় উড়ে যাক একমুঠো কনকাঞ্জলি

সজ্জিত হোক রাতুল চরণ, বাজুক আগমনী।

 

দানবদলনী দুর্গা তুমি, আমার প্রাণের উমা

সৃষ্টি তোমার খেলার পুতুল, তুমিই তো শ্যামা।

 

পথের পাশে লুটিয়ে পড়ে রক্তকরবী কতো

এবার ওদের বিনাশ কর মা, পাপী তাপী  যতো

 

এবার আমার উমা ধরবে শ্যামার করাল অসি

ধ্বংসস্তূপের মশাল জ্বেলে করবে তাদের ফাঁসি।

 

অনেক হলো, আর নয় এবার জাগবে উমা

আগমনীর সুরে এবার বাজবে বিজয় ডঙ্কা।

 

শিউলি ফোঁটা ভোরের আলোয় মহালয়ার গান

উমা আমার থাকুক বেঁচে অসুরের হোক ভাসান।

 

জরা জীর্ণ প্রাচীর ভাঙুক বদ্ধ পথ যত,

উমা আমার প্রাণের পরে বাঁচুক বছর শত।

 

শারদীয়ার আগমনে মিটুক অন্ধকার,

আদর যত্নে ভরে থাকুক উমা আমার তোমার


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই সপ্তাহের জনপ্রিয় পোষ্ট

আকর্ষণীয় পোষ্ট

প্রতাপ : ১৮তম সংখ্যা (পূজা সংখ্যা - ১৪৩২)

সম্পাদকীয়  … শরতের আকাশে মেঘের ভেলা ,  দিগন্তে কাশফুলের শুভ্র হাসি —  যেন বাংলার মাটিতে ফিরে আসে এক চিরন্তন প্রতীক্ষার ঋতু। ঢাকের আওয়াজ , ...