আইনের চোখে কালো কাপড়
যখন দেখি শতোর্ধ বৃদ্ধ ভারতীয় কিনা
প্রমাণ দিতে আদালতে ঘন্টার পর ঘণ্টা
বারান্দায় পড়ে থাকেন, তখন জানতে
ইচ্ছে হয়, স্বাধীনতা তোমার বয়েস কত!
ভারত, বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তান
শতোর্ধ তো এখনো নয়।
যখন দেখি কাগজের প্রামাণিকতায়
মাকে বন্দি হতে হয় ডিটেনশন ক্যাম্পে
তখন জানতে ইচ্ছে হয় আইনের কাছে
কোথায় হারিয়ে গেল মানবতা!
একাত্তরটাই সীমারেখা আর পরিচয়?
যখন দেখি ঘরের একমাত্র সম্বল
ছেলেটির খোঁজাখুঁজি চলে আর
নদীর জলে ভেসে উঠে পচাগলা লাশ
তখন জানতে ইচ্ছে হয় খসড়ার কাছে
প্রাণ নিয়ে খেলার কে দিলো অধিকার!
উন্মাদ উল্লাসে বিজয় কীর্তন যখন দেখি
কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয় জনতার
তখন ঘৃণা আর লজ্জায় জানতে ইচ্ছে হয়
এই টাকা দিয়ে করা যেতো না দূর
বেকারত্বের হাহাকার!
ক্রান্ত হও ভাই, ভেঙ্গে দাও সংকীর্ণ যত
মানষিকতার বেড়াজাল, উন্মুক্ত আকাশ
এসো হাতে হাত ধরে মানুষের কথা বলি
উড়াই ত্রিরঙা নিশান ভারত মাতার।
পাঞ্জাব যদি পাঞ্জাবির, বিহার যদি
বিহারির, আসাম যদি আসামির
তবে ভারত দেশটি কার!
প্রাণের গ্রন্থ সংবিধান, জানতে ইচ্ছে হয়
আইনের জন্য মানুষ না মানুষের জন্য আইন
নাকি জীবন নিয়ে খেলা ভাগ্যবিধাতার।
আইনের চোখে কালো কাপড়
বড় লজ্জার, বড় লজ্জার, বড় লজ্জার!
....
অন্ধ নাচ
বন্যার কান্না ভাসছে এখনো
দুঃসহ জীবন রাত্রিবাস
আর্ত যন্ত্রণা হতাশার মেঘে
তপ্ত, ক্লান্ত, উপবাস।
ঘৃতের বাতি ধূপ চন্দন
ঢাকে পড়লো কাটি
রঙ, ঢঙ আর সাড়ম্বরে
ভাবের পরিপাটি।
কপালে যার কাল বৈশাখী
উত্তাল সাগরে কিসের ভয়?
জীবন তো আর ঘুমের ঘোরে
অলীক কোনো স্বপ্ন নয়।
তালের পাতার নৌকা দিয়েই
জীবন নদীর পারাপার
দুহাত যাদের কাণ্ডারি হয়
প্রয়োজন কি মহামায়ার!
ক্ষুদার পেটের জ্বালা কি আর
জোড়ায় শিউলি ফুলে
অন্ধ নাচের উন্মাদনা
কাণ্ডজ্ঞান ভুলে।