। সুরজ কুমার নাথ ।
দুর্গা তার
মায়ের কাছে বায়না ধরেছে,
এবার দুর্গা পূজায় সে কোন জামা কাপড় কিনবে না। তার তিনশো টাকা
চাই। প্রতি বছর দুর্গার মা দুর্গাকে নতুন জামা কিনে দেন। তবে মাকে কখনো পুজোয় নতুন
শাড়ি পরতে দেখেনি সে। বাবা নেই, কে-ই বা কিনে দেবে! সামান্য রেশনের চাল আর লোকের
বাড়ি কাজ করে যে উপার্জন তাতেই কোনো রকমে ঘর ও মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালান দুর্গার
মা। দুর্গা টিফিনের টাকা থেকে প্রায় দুশো জমিয়েছে। ভেবেছে মাকে না জানিয়ে এবার পুজায়
মায়ের জন্য একটি নতুন শাড়ি নিয়ে আসবে। তাই বুঝি নতুন জামার বদলে টাকা তিনশো বায়না
ধরেছিল দুর্গা। যাই হোক হাতে এখন পাঁচশো টাকা আছে, কিছু করাই যেতে পারে। একদিন কাজ থেকে ফিরতে দুর্গার মার প্রচন্ড
জ্বর এসেছে। দুর্গা সঙ্গে সঙ্গে মাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডাক্তার দামী দামী কিছু
টেবলেট লিখে দিলেন। মাসের প্রায় শেষ, হাতে টাকা নেই। দুর্গার মা বলে- ওষুধ
আর কেনার দরকার নেই,
এমনিতেই সারবে। দুর্গা সবই জানে। সে না চাইতেও মায়ের মুখখানায়
একপলক চেয়ে তার ছেঁড়া রুমালের ভাঁজ খুলে মায়ের হাতে পাঁচশো টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলে, ‘এই নাও মা ধরো... আমরা ওষুধ নিয়েই বাড়ি ফিরব।’ আর মনে মনে বলে, ‘এবছর আর পারলাম না মা... । যাই তোক এবারে তুমি সুস্থ হও, আগামী বছর না হয় নতুন শাড়ি কিনে দেবো।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন