রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৮

সানী ভট্টাচার্য -র দুটি কবিতা

।।'প্রতাপ' পূজা সংখ্যা - ১৪২৫।।

অজানা স্মৃতি

তোমার স্মৃতি অজানা হয়ে
শুধু চোখের সামনে ভাসে।

ভাবনাগুলো আকাশের মেঘ থেকে
বৃষ্টিতে রুপান্তরিত হয়ে
কিছু বলতে চায় আমায়।

এক অজানা মুখ হয়ে তোমার ছবি
আজও এলবামেতে
পরে আছে।

শহরের ভিড় তোমার-আমার ভাবনা থেকে
আজ অনেকদূরে ।

আর হাসেনা শ্যামলীদের
পুকুরপাড়,  আমাদের কথা ভেবে!
গাছপালাও আজ আছে নীরবে।

হয়ত তোমার জানা নেই
কলম দিয়ে তোমার নাম লেখার
সেই অভ্যাসটা
আর নেই।

...

ভালবাসা ২৪ ঘন্টা

শুপ্রভাত,
আজ রবিবার, ছুটির দিন
হালকা মনে, ভালবাসার সাথে
চায়ে  চুমুক দিন।

   রেডিওর পাশে বসে
   দুপুরের খাবার সাথে
   রবীন্দ্র সংগীত শুনুন।

বিকেলে হাঁটতে গিয়ে
       কিংবা
বেলকনিতে বসে অতীতের
ভাবনাগুলো মনে করুন।

                 এবং

রাতের খাবার পরে -----
কারো
অনুমতি ছাড়াই,
কিশোরদার কোনো
রোমান্টিক গান শুনে
স্বপ্নে হারিয়ে যান।

             শুভেচ্ছা  রইল
         সকাল থেকে স্বপ্ন
                অবধি।

              ইতি------
" ভালবাসা চব্বিশ ঘন্টা "

রাজু দাস এর দুটি কবিতা



সুখ

সুখ, সে কেমন কখনো দেখিনি

কি তার প্রাচুর্যতা

আজও বুঝতে পারিনি

শুধু আধঘুমা অবস্থায়

প্রতিদিন স্বপ্নেই আসে

রাতের অন্ধকারে হাজার

সুখের গল্প নিয়ে

রাতের শেষে সেই কুঁড়েঘর

মাটির দেওয়াল আর বিন্না ছনেরচাল।

জানো!

মাঝে মাঝে খুব ভয় হয়

কখন জানি উড়িয়ে নেয়

ঝড় তুফানে ওই ঘর

তখন লন্ঠনের আলোও নিবে যাবে

থাকবে পড়ে অন্ধকার আর অন্ধার।

সত্যি খুব কষ্ট হয়,

সমগ্র পৃথিবীটাই ছলনা

সুখ নামে কিছুই নেই।।



বন্ধু

ওরে বন্ধু

আমি কখনো ভাবিনি

তুই যে আবার ফিরে আসবি

ওই নীল আকাশে

রামধনুর সাত রঙে রঙিন হয়ে।

সত্যি,

আমাকে চমকে দিলে!

যেনো বৃষ্টি মাঝে এক ঝলক রোদ্দুর

আধার রাতে ফুটফুটে জোৎস্না

আর ব্যস্ত মনে বুক ভরা হাসি।

আমি কখনো ভাবিনি

বন্ধুত্বের যে এতো টান

যাকে ভুলতে গেলেও ভুলা যায়না

বার বার মনে পরে

তার সাথে কাটানো সময় ও স্মৃতিগুলো

আর সেই স্মৃতিই একদিন

পৌঁছে দেয় ওই ঠিকানায়

যেখানে স্নেহ ভালোবাসা

মায়া মমতার ভান্ডার,

রাগ অহংকার হিংসা নিন্দা

কিছুই নেই শুধু হাসি খুশির জমজমাট।

ওরে বন্ধু এ কেমন সম্পর্ক

যার গভীরতা এতো অসীম?


 

পবিত্র গঞ্জু -র দুটি কবিতা

।।'প্রতাপ' পূজা সংখ্যা - ১৪২৫।।

সফলতা

মেয়েটির নাম হিমা দাস।
সাধারণ খেটে খাওয়া পরিবারে
তার জন্ম।
গাঁয়ের পাঁচ- সাতটা
মেয়ের মতো
তারও সমান যত্ন।
সুবিধা নেই ইচ্ছেমত
আছে যত শহরেতে
শুধু ইচ্ছাশক্তি ভিন্ন।
পরিশ্রম তার অবিরত
নিয়মিত যেমন ব্রত
কে ভাঙে তার স্বপ্ন।
শহর যখন  ব্যস্ত খেলায়
গ্রাম তখন সিক্ত ভেলায়
বিলীন পদচিহ্ন।
হিমা নীরবে সময় কাটায়
প্রস্তুত হয় ভেজা মাঠে কাদায়
কালচক্র হয় প্রসন্ন।
উপড়ে ফেলে পরিহাস
নিজেকে করছে প্রকাশ
দেশমাতৃকার জন্য।
দেশ-মহাদেশের প্রতিযোগিতায়
সেও যখন সুযোগ পায়
প্রদর্শন হয় ভিন্ন।
হিমার হয় জয়জয়কার
গোল্ডেন গার্ল নাম তার
আজ আদর্শ কন্যা।
দৃষ্টান্ত সে নিখিল বিশ্বের
নিত্য সাধনা,লক্ষ্য স্থির
হেরে যায় বাধা-অবমাননা।

...

বেদনাময়

যদি তুমি লৌকিক আকাশে
মেঘাচ্ছন্ন থাকতে চাও...
থেকো।
নিলামে বিকিয়ে দাও হংস-বলাকার দামে।
নিজেকে নিংড়ে দাও...
দেখো।
কত ফুল অতিথি রূপে এসেছিল জানি।
আজ একা শালিক কিংবা
তালগাছ।
অনেক অট্টালিকাগগুলি আজ বিধবা।
অহংকারের ভোজ অতীত
নিয়তির পরিহাস।
যদি ব্রহ্ম মুহূর্তের পূর্বেই তুমি
ভক্তি কিংবা শক্তি দর্শাও,
দেখাও।
মরীচিকায় ধাওয়া বিফলমনোরথ।
চল নিজ ছন্দে সম্বন্ধ নয়,
তা বেদনাময়।

পিনাক দাস এর কবিতা

।।'প্রতাপ' পূজা সংখ্যা - ১৪২৫।।

ভালবাসা

হৃদয়ের স্পন্দনে ছিল তাহারই কথা
ছিল ছন্দের সাথে ছন্দের ব্যাথা
কি করিয়া হায় ঘটিল এ কথা
কি শুনিয়া সে কহিল মোরে
তাহার আপন ভাষা
আপনার কথা
রজনীর বুকে স্থান সাজাইয়া সে
কোথায় হারাইল।
ভাবিতে ভাবিতে সে একদা
নিজেকেই নিজে কাহিল
এ তো কিছু
আর কিছু নয়
এ তো ব্যর্থ ভালবাস।

বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৮

রফিক উদ্দিন লস্কর এর কবিতা

।।'প্রতাপ' পূজা সংখ্যা - ১৪২৫।।

.             অবিশ্বাস

সবটুকু দিয়েছি উজাড় করে
আমারই আছে যতো,
নিজেই আজ পালিয়ে বেড়ায়
ফেরারি পাখির মতো।
আমি নই ওস্তাদ নই অভিনেতা
নহি কোন জাদুকর,
হাসিমুখ দেখে বুঝে নাই কেহ
ভাঙা যে মনের ঘর।
এ দুর্দিনে শুনিবে কি কেহ আর
আমারি কষ্টের কথা,
হারিয়ে গিয়েছে যে ছিল শোনার
সবচেয়ে মনযোগী শ্রোতা।

মঙ্গলবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৮

তোমার জন্য কিছু প্রশ্ন



।। সুশীল দাস ।।


কিছু প্রশ্ন বার বার

মনকে টেনে নিয়ে যায়

তোমার কাছে।

ভাল তো বেসে ছিলে

কিন্তু ভুল বুঝছো অনেকটা

তাই ভীষণভাবে জিজ্ঞেস করার ছিল

কিছু প্রশ্ন তোমাকে।

কেন চলে গেলে?

আমি কি এতটাই খারাপ ছিলাম?

সেগুলি প্রশ্ন অনেক দিন হয়ে গেছে

আনসিন হয়ে পরে আছে

তোমার ওয়াটসআপ নম্বরে।

তুমি কেন কথা রাখনি?

ভুলে যদি যাবে

তাহলে কেন এসেছিলে?

এ সব প্রশ্ন আজও

স্ট্যাটাসের জায়গাটা ছাড়েনি।

কেন করেছিলে প্রমিস?

কেন দেখিয়েছিলে রঙিন স্বপ্ন?

মনের মধ্যে শুধু এইগুলি প্রশ্নই

বার বার উতলে উঠে

তোমার জন্য ।

 

সোমবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৮

মৃত্যু



।। ভানু ভূষণ দাস ।।


মৃত্যু! মৃত্যুটা কেমন হবে?

        ভীষ্মের মৃত্যু, দধীচির মৃত্যু

        না সক্রেটিসের মৃত্যু

            আরো কত আছে

        মার্টিন লুথার, চে গোয়েভরা

        ইন্দিরা গান্ধী ওরাও মরেছিল

        কি পেলো?

        ওদের মতো চাইনা।

চোখে ভাসে ৩০ অক্টোবরের ভাঙ্গাগড়

        গুজরাটের গোধরা কি দুর্বিষহ

        রক্তের দাগ কালশিটে

        কান্নার নমকিন ভাষা - হাহাকার

        চিতার পাশে বিনিদ্র।

আরো অনেক দেখেছি; নীলোৎপল অভিজিত

কি দোষ করেছিল, এত শত হলো

        ক্ষান্ত, শান্ত হয়েছে কি?

তবুত চলছে পায়ে পায়ে

সীমানা পেরিয়ে জীহাদের ঘাটে।


রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৮

ঝড়


।। দোলনচাঁপা দাসপাল ।।

 

প্রচণ্ড এক ঝড় চাই আমি।

প্রচণ্ড!  বৈশাখী তাণ্ডব!

রুদ্র বাতাস আর দ্রৌপদী -তেজী বৃষ্টি ফোঁটা।।

সে বাতাসে ভেঙ্গে যাক্ নুইয়ে যাওয়া আধমরা সম্পর্ক ।

সে বৃষ্টিতে ঝরে যাক্ মৃতপ্রায় কুঁড়ি

যা আমাকে মনে করিয়ে দেয় সদ্যমৃত ভ্রূণকে।

দাঁড়িয়ে আছি আমি ধ্বংস স্তুপ নালান্দায়।

প্রাচীন অভিমান আর নিত্য ব্যর্থতার গ্লানি মাথায় নিয়ে।

গণগণে সূর্য আর আগুন ঝরা পৃথিবীর মধ্যে

এক দগ্দ্ধ বলয় হয়ে।

শ্রাবণের রিম ঝিম ধারা আমাকে পারবে না দিতে কোন নুতন জন্ম।

তাই  আমি চাই এক ঝড়।

বিধ্বংসী তাণ্ডব! দুযোর্গপূর্ণ প্রলয়!

যে ঝড়ের শেষে আমি জেগে উঠব এক

নির্বিকার সকাল হয়ে -----

যেন কিছুই হয়নি গতকাল রাতে।

সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮

প্রনিতা দাস -এর দুটি কবিতা



মায়ের আগমনে

মা গো তোমার আগমনে
     আনন্দ আজ এই ভুবনে।
মণ্ডপগুলো উঠছে সেজে
     কত রঙের রঙীন সাজে।
সাজবে সবাই নতুন করে
      আয়োজন তাই ঘরে ঘরে।
শঙ্খ ঘণ্টা বাদ্য করে
     নেবে তোমায় বরণ করে।
ঢাক ঢোলের মধুর সুরে
      খুশিতে সবার মন ভরে।
মিলেমিশে সবাই ঘু্রে
     একসাথে মণ্ডপে মণ্ডপে।
মাগো তিন দিনের তরে
      আসো তুমি বাপের ঘরে।
বিজয়া দশমীর দিনে
        তাই তো সবার অশ্রু ঝড়ে।



দূর্গা মা

তোমার চরণে জানাই মা প্রনতি
     তুমি সবারে দাও সুমতি।
হিংসা  বিবাদ মারামারি
      আমরা কভু যেন নাহি  করি।
সৎ চিন্তাভাবনা যেন অনুসরণ করি।
অসুর-নরপিশাচদের কর তুমি নাশ
তোমার দয়ায় হয় যেন মা পৃথিবী প্রকাশ।
মনের আধাঁর ঘুচে, দাও মা তুমি আলো
সবার হৃদয়ে প্রেম ভক্তির ভাব জেগে তোল।

বৃহস্পতিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৮

মৃদুলা ভট্টাচার্য -র দুটি কবিতা

।।'প্রতাপ' পূজা সংখ্যা - ১৪২৫।।

কবিতার শহর

প্রতিদিনের শরীর জুড়ে ছড়িয়ে থাকা  কিছু
অক্ষর ক্রমশ জড়ো হয়ে সৃষ্টি হওয়া শব্দ
বিন্যাসে হয়ে ওঠে এক একটি কবিতা।
যে অক্ষরগুলো ধরা দেয় না সবার চোখে,
শুধু একজন কবিই দেখতে পান ওইসব
অক্ষরের শব্দবীজ, আর ওইসব শব্দবীজের
রোপণ বিন্যাসে একজন কবি গড়ে তুলেন
সুদৃশ্য সাজগুজে কবিতার শহর ।
যে শহরে পাওয়া যায় সুন্দরের ব্যাখায় সুখ
দুঃখের বিষাদ অবসাদেও প্রেম ভালোবাসার

সুরভিত আঘ্রাণ আনন্দ ।

----

অনুভবের ফুলকি

সময়ের হাত ধরে বয়ে চলা দিনকে সামনে
রেখে চেতনার অর্ধেক উন্মুখতায় অনুভবের
ফুলকি ঝরায় কখনো কখনো রোদ-বৃষ্টির
ধৈর্য হারা প্রতাপ।

মুখ থুবড়ে পড়া মেধা যেন সভ্যতার যাচাইয়ে

আকাশের বুকে খোঁজে বোধের চেতনাবিন্দু ।

এই সপ্তাহের জনপ্রিয় পোষ্ট

আকর্ষণীয় পোষ্ট

প্রতাপ : ১৭তম সংখ্যা (পূজা সংখ্যা - ১৪৩১)

প্রচ্ছদ  :  শুভজিৎ   পাল সম্পাদকীয় ......... বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত উৎসব , দুর্গাপূজা। এই সময়টিতে বাঙালির প্রাণের মিলন , সংস্কৃতি আর ঐতিহ...