-সৈকত মজুমদার
ঈশিতা খুবই শান্ত, লাজুক ভাবগম্ভীর স্বভাবসিদ্ধ একটা মেয়ে। দেখতে বেশ সুন্দরী ও আকর্ষণীয়। আমি ওকে কলেজের নবীনবরণ থেকে দেখছি, একা বিলোনীয়া শহরে ভাড়া থেকে পড়াশোনা করছে। কলেজে ওঠার পর দ্বিতীয় বর্ষে বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হয়, তখন বাড়ির লোকদের শায়েস্তা করার জন্য এক বান্ধবীর বাড়িতে কিছুদিন সে লুকিয়ে থাকে।
এখনো কোনো ছেলের চোখে চোখ রাখেনি, প্রেমের প্রস্তাব যে পায়নি এমন নয়। সে এসব প্রেম ভালোবাসায় বিশ্বাস করে না, ওর কাছে এসব নাটক মনে হয়! আজ অবধি ঈশিতা কারো প্রেমে পড়েনি। কারণ, নিজের অনেক বান্ধবীদের দেখেছে প্রেম করতে। আবার কিছুদিন পর ওদের মধ্যে ব্রেকআপ হয়। হয়তো ঈশিতা এসব দেখে নিজে আর প্রেমে এগোনোর সাহস পায়নি। যদিও কলেজের অন্যান্য মেয়েদের চাইতে ঈশিতা অনেক রূপসী ছিল। ওর মনের মধ্যে প্রেম সম্বন্ধে সব সময় একটা ভয় বিরাজ করত। সে ভাবত, প্রেম মানে যন্ত্রণা অথবা প্রতারণা!!
একদিন এই ঈশিতার প্রেমে পড়ে যায় সৌম্য, তা সকলেরই ধারনাতীত ছিল। ঈশিতাকে ওর ভালো লাগে এবং মনে মনে ভালোবাসত। কিন্তু মুখে বলেনি কখনো। তারপর হঠাৎ কয়েকদিন ধরে ঈশিতা কলেজ আসেনি, ওকে না দেখতে পেয়ে সৌম্যর খুব মন খারাপ হয়ে যায় এবং ঈশিতার এক বান্ধবীর কাছে ওর খবর জানতে চায়। তখন বন্ধুরা নানা ব্যঙ্গোক্তি করে। সৌম্যর খুব খারাপ লাগে।
তারপর সে মনে মনে স্থির করে, এবার যেদিন কলেজ আসবে সেদিনই ঈশিতাকে প্রপোজ করবে। একাকী এ বিষয়ে রাতদিন প্র্যাকটিস করে, আর রঙিন স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়ে।
- "আমি অন্যদের মতো অভিনয় করতে পারি না, যেটুটু ভালোবাসি শুধু মন থেকেই।"
হঠাৎ একদিন কলেজ গেইটে মুখোমুখি সৌম্য-ঈশিতা, ধবধবে সাদা একটা প্রাইভেট গাড়ি থেকে হাসিমুখে নামে ঈশিতা। পরনে শাড়ি, কপালে সিঁদুর!
সৌম্য বজ্রাহত ব্যক্তির ন্যায় অপলক চোখে চেয়ে থাকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন