
সম্পাদকীয় …শরতের আকাশে মেঘের ভেলা, দিগন্তে কাশফুলের শুভ্র হাসি— যেন বাংলার মাটিতে ফিরে আসে এক চিরন্তন প্রতীক্ষার ঋতু। ঢাকের আওয়াজ, শঙ্খধ্বনি আর শিউলির গন্ধ মিশে যায় উৎসবের আবেশে। আমাদের গ্রাম থেকে শহর— সর্বত্র এ কেবল ধর্মীয় আচার নয়, এ আমাদের সংস্কৃতির মহাযজ্ঞ, মিলনের গান, বাঙালি জীবনের মহোৎসব।
বাংলা সাহিত্যে শারদ ঋতুর এই মাহাত্ম্য চিরকাল অমলিন। কবিদের কলমে কাশফুলের শুভ্রতা, শরতের নীল আকাশ, পূজার ঢাকের শব্দ আর মানুষের মিলনমেলা যেমন ফুটে উঠে অপার সৌন্দর্যে। তেমনি পূজার আনন্দে মিশে থাকে প্রেম, বেদনা আর আশার অমৃতধারা। বাংলা পূজা বার্ষিকী মানেই এক নতুন আলো, নতুন স্বপ্ন, নতুন সৃজনের জগৎ— যা পাঠকের হাতে তুলে দেয় এক ঋতুচক্রের নবীন প্রভাত। এই ধারায় ‘প্রতাপ’ তার ক্ষুদ্র অথচ অটল পদক্ষেপে হাজির পূজা সংখ্যা ১৪৩২ নিয়ে। এখানে রয়েছে কাব্যের সুর, গল্পের রঙ, প্রবন্ধের দীপ্তি— আর তার সঙ্গে সমাজের নাড়ির স্পন্দন।
আমাদের এই ছোট কাগজের স্বপ্ন— শরতের আকাশের মতো বিশাল, কাশফুলের মতো নির্মল। পাঠকের কাছে এই সংখ্যা হয়ে ওঠবে উৎসবের সঙ্গী, সৃষ্টির জাগরণে নতুন প্রেরণা— এ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। পূজার এই আনন্দের মৌসুমে আমাদের কামনা— সাহিত্যের আলোর সঙ্গে সমাজচেতনার বন্ধন আরও দৃঢ় হোক।
শুভ শারদীয়া …
- শৈলেন দাস
। সুচরিতা দাস ।
মায়ের আঁচলের গন্ধ ছাড়া একদিন ঘুম আসত না যার,
মাঝরাতে কখনো মায়ের কথা মনে পড়ে বুকটা ব্যথায় কঁকিয়ে ওঠে আজ।
ভেবেছিলাম, চুপিসারে অন্ধকারেই বেরুবো
কেউ বলবে না , -- যাচ্ছো কোথায়?
কার সাথে? কেন যাচ্ছো? কোথায় যাচ্ছো?
উত্তর মেরুর বরফ গলা জলে সদ্যস্নাত হয় বোষ্টুমী,
নীড় ভোলা দলছুট বারবার ফিরে আসার গান গায়।
ভোরের বাতায়নে লাগুক শরৎ সূর্যের লালিমা
শিউলি ফুলে সজ্জিত হোক হৃদয়ের আঙিনা।
আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলায়,
ঘাঘরা নদীর 6th AP ব্রিজের দক্ষিণ তীরে
ছোটো একটি গ্রাম—সন্ন্যাসীটিলা।
তারপরে সুখ হাসনাহেনার মতও হাসে ।
বিষণ্ণতা আর মোহ যদি হৃদয় করে কালো,
বিরহকে মণিহার আর মুক্তো করে ব্যাথার মুকুটে জ্বালো ।
রাতকে ফুটবলের মত লাথ মেরে মেরে
নর্দমায় ফেলে শেয়ালেরা রোজ
তারপর ঘুমন্ত কুকুরেরা জেগে ওঠে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়
দিন পার হচ্ছে অস্বস্তিকর মন্তব্যে।
প্রকৃতির বাইরে আর ভেতরে প্রকৃতি...
নিবিড় আঁধার যেথা উজ্জ্বল হয়ে
কুচক্রী, বিশ্বাসঘাতকের ভারে
অনাদরে , অপমানে হারিয়ে যাচ্ছে
আকাশ নীল - নীলাভ আঁচল, কোথাও সাদা ভেলা
জুড়ে আছে, শরতের মায়ামাখা সুগন্ধ।
কোন ক্ষোভ নেই, কোন কষ্ট নেই,
অথচ নীরবতায় নিবিড় হয়ে আছে ।
ঢাকের সুর বাজে, কাঁপে আকাশ বাতাস,
মহালয়ার সুরে জাগে শিউলির সুবাস।
তোমার অষ্টাদশী মেয়েটাকে দেখলেই
মেয়েটির হাঁটা চলা, কথা বলা
ঢাক বাজছে, কাশর বাজছে, মা আসছে ঘরে,
নতুন নতুন ড্রেস পরবে পুজোর এই ভরে।
মা আসছে এই জগতে, কত যে রূপ ধরে,
ভিড়ের মধ্যে আমার শুধু মাকেই মনে পড়ে।
প্রিয়তমা তুমি ছিলে অচেনা,
কবিতা লিখার ডায়েরি ভরে যায়
মোবাইল খুললে শুধু ই এম আই!
পথকুকুর ঘুমোয় নিশ্চিন্তে শান্তিতে,
'দুর্গা' তুমি অবিরত জেগে থেকো 'চৈতন্যে'
। পুষ্পিতা দাস ।
ও- মা দুটো তো প্রায় বেজেই গেলো। আমি তো এখনো রেডি হইনি। আজও আদ্যা আবার রাগ করবে। বলেছিল - ঠিক দুটোয় রেডি থাকবি কিন্তু। অদিতি বিড়বিড় করছিল। ঠিক তখনই ডোরবেল বেজে উঠলো।
-- উমাদিদি, দেখবে গো কে এসেছে? দরজা খুলে উমাদি উত্তর দিল -- দিদি, আর্যাদিদি গো।
-- এসে গেছি। এ-ই তো জানতাম - রেডি হোসনি তো -- তুই টাইমে রেডি হয়ে যাবি, সেটা হয়!
সেলফি পয়েন্ট
। সৈকত মজুমদার ।
স্কুল কলেজ জীবনে প্রেম ভালোবাসায় আবেগ কাজ করে, বিবেক তখন নাবালক। স্কুলের গন্ডি পেরোতেই বোঝা যায় প্রেম ভালোবাসা জীবনের সব নয়; তার বাইরেও একটা জগত আছে। প্রেম ভাত দেয় না, বোঝাপড়া দেয়। আর পরিশ্রমের ফলই সেই জগতের জোয়ার ভাটা সামলে জীবন নৌকা বায়।
দুর্গমাসুর বেদজ্ঞান লাভ করে।
বিপ্রগণ বেদমন্ত্র বিস্মৃত হোন।
কেউ বলে দেবী তো কেউ বলে মনমোহিনী।
আমি বলি তিনি দেবী যিনি হলেন সর্বত্যাগী ।
মাটি পাথরে নয় গো দেবী, তিনি বিরাজিত সেখানে।
যেখানে মাটি-পাথরের ডেরায় কোমল হাত রূপান্তরিত কংক্রিটে।
শরতের নীলিমায় ভেসে আসে অদৃশ্য সঙ্গীত,
শিউলির সুবাসে ভিজে ওঠে প্রভাতের অন্তরঙ্গতা।
কাশদোলায় নদীর তীরে যেন প্রকৃতি নিজেই
উৎসবের আহ্বানপত্র পাঠায় সমগ্র জগৎকে।
কাকতালীয়
। সত্যজিৎ নাথ ।
পিতৃপক্ষে তর্পণ করতে এবারও অন্নপূর্ণা ঘাটে এসেছে মানব। গতবার প্রথম এসেছিল বড়দার সংগে নিজে আগ্রহী হয়ে। এর আগে বড়দাই আসত শুধু বছরের এই বিশেষ সময়টাতে বাবা ও বাকিদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করতে। বাবা নেই আজ সাত বছর হতে চলল, বড়দা অনেকটাই পুষিয়ে দিয়েছে সে ক্ষতি।
। আব্দুল হালিম বড়ভূইয়া ।
নদী বহে চলে নিরন্তর তার অনুকূল গতিতে
কখনও বা গতি বদলায় আপন খেয়াল খুশিতে
নদী নীরবে এপার ভাঙ্গে ওপার গড়ে
আজ আমি তোমাকে ডাকঘর থেকে নয়,
সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন কলাম থেকে লিখছি।
মাতৃভাষার চেতনা
- যোগেন্দ্র চন্দ্র দাস
"যে জাতি নিজ ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে পারে না, সে জাতি কখনও উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারে না।” বঙ্কিমচন্দ্র কথিত এই নিজ ভাষা হচ্ছে মাতৃভাষা। মাতৃভাষা শুধু কি একটি ভাষা? না। মাতৃভাষা একটি জাতির আত্মপরিচয়। তার সামগ্রিক সংস্কৃতির বাহক। মাতৃভাষার মাধ্যমে আমরা অন্য ভাষা-সংস্কৃতিকে সহজে আয়ত্ত করতে পারি। আমার মাতৃভাষা বাংলা। তাই এই ভাষা আমার প্রাণের স্পন্দন, আত্মপরিচয়ের প্রতীক, মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম। বাংলা ভাষার মধ্যেই খুঁজে পাই বিশ্ব চরাচরের যাবতীয় মাধুর্য, বাংলা ভাষার মতো আর কোন ভাষা আমার 'কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিয়া' প্রাণকে আকুল করতে পারে না।
কী নিয়ে লিখবো ভেবে মনটা হাহাকার করে।
চাঁদের দিকে তাকাতেই সে বললো—
"আমার শরৎ আসুক, সেখানেই লেখো!"
সাত সমুদ্র তেরো নদীর ঘাটে।
আস্তানার জন্মান্তর কৃতকর্ম।
কোনও কোনও মানুষ বাড়ি হয়ে যায়
তাদের দেখলে মনে হয়, মস্ত একটা ছাদ!
যার তলে শুয়ে থাকা যায় বড় নিশ্চিন্তে
কাঁদা যায়, হাসা যায়, খুশগল্পে বিভোর-
সময় হয় না কথা বলার, ভালোবাসার
সময় হয় না খোলা আকাশের গায়ে ছবি আঁকার।
টেবিলের উপর রবি নজরুল সুকান্তের কবিতায় জমে ধুলোর আস্তরণ,
সময় হয় না সেগুলোতে নিজের জীবন খুঁজে পাওয়ার।
ভাঙ্গা সেতুর মতো দাঁড়িয়ে আছে সময়
মানুষ আশ্রয় খুঁজছে, মানুষ পরিচয় খুঁজছে।
অথচ আকাশে তার অনিশ্চয়তার মেঘ
তবু বুকে তার আশা ভরসার দোদুল দোল।
বিবর্তন এবং পরিবর্তন নামক
মোলায়েম শ্বেতশুভ্র তুষারে মোড়া
যেন দার্শনিকের অনন্ত নোটবুক,
অনন্তের বুকে অপার বিস্ময়।
জন্মের ওপারে কোন ঈশ্বর বসে নেই
যে লিখে রেখেছে আমাদের ভাগ্য
বরং এখানেই রয়েছে নিষ্ঠুর অমানুষেরা!